অনলাইন ডেস্ক: থানায় আটকে রেখে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে সম্পত্তি লিখে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগে চট্টগ্রামের রাউজান থানার সাবেক ওসিসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
উপজেলার পূর্বগুজরা ইউনিয়নের আঁধার-মানিক এলাকার রাজগোপাল চৌধুরী নামের এক পশু চিকিৎসক মামলাটি দায়ের করেন।
সোমবার চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- পূর্বগুজরা ইউনিয়নের আঁধার-মানিক এলাকার সুনীল দাশের ছেলে রাজীব দাশ, রাউজান থানার ওসি কেফায়েত উল্লাহ, ১০ নম্বর পূর্বগুজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দীন আহমেদ ও রাউজান থানার এসআই টোটন মজুমদার।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী দেলোয়ার আহমেদ চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ওসিসহ চারজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি আদালত গ্রহণ করেছেন। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর এ মামলার পরবর্তী ধার্য তারিখ রয়েছে। ওই দিন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য আদালত আদেশ দিতে পারেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রাউজান উপজেলার পূর্বগুজরা ইউনিয়নের আঁধার-মানিক এলাকার বাসিন্দা সুনীল দাশ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৬১ শতক জমি ক্রয় করেন মামলার বাদী রাজ গোপাল চৌধুরী। পরবর্তীতে ওই জমি বিক্রেতার ছেলে রাজীব দাশ জোরপূর্বক ফিরিয়ে নিতে চেষ্টা করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ জুলাই মামলার বাদী রাজগোপাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাউজান থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন রাজীব দাশ। অভিযোগের সূত্র ধরে গত ১৪ আগস্ট সকালে রাজগোপাল চৌধুরীও তার ভাইদের নিয়ে রাউজান থানায় উপস্থিত হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করে।
থানায় যাওয়ার পর রাউজান থানার ওসি কেফায়েত উল্লাহর নির্দেশে রাজগোপাল চৌধুরীকে থানায় আটকে রাখা হয়। এ সময় তার পকেটে থাকা ৭ হাজার টাকাও পুলিশ নিয়ে নেয় এবং থানা এসআই টোটন মজুমদার তাকে মারধর করে ব্যাপক নির্যাতন করে। কেনা সম্পত্তি পুনরায় রাজিব দাশের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়ার জন্য চাপ দেন ওসি।
রেজিস্ট্রি করে না দিলে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। অন্যথায় ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হয়। বিনা কারণে থানায় আটকে রেখে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়ার চেষ্টার বিষয়টি ‘৯৯৯’-এ ফোন করে অবহিত করা হয়। ওই দিন বিকালের দিকে রাজগোপাল চৌধুরীকে থানা থেকে ছেড়ে দিলেও তার জমি থেকে ছোট-বড় প্রায় ৪৩টি গাছ কেটে নেয়া হয়।
জোরপূর্বক দখল করা হয় তার জমি। এ কাজে পুলিশ ছাড়াও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দীন আহমেদ সহযোগিতা করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
মামলার বাদী রাজগোপাল চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘ এক বছর ধরে আমি নিজ ঘরে থাকতে পারছি না। আমার ঘরটিও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দীন আহমেদের সহযোগিতায় রাজিব দাশ দখলে নিয়েছে। এমনকি আমার নিজ পুকুরটিও ইউপি চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় রাজিব দাশ অন্যজনকে দিয়ে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাকে এখন এলাকায় যেতে দেয়া হচ্ছে না। এলাকায় গেলে মেরে ফেলার হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। এখন নিরুপায় হয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। যুগান্তর
মতিহার বার্তা ডট কম: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.