নিজস্ব প্রতিবেদক : আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এবারও পেঁয়াজ নিয়ে শুরু হয়েছে তেলেসমাতি কারবার। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখাতে রোববার থেকে খোলা বাজারে ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করবে টিসিবি। ইতোমধ্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপুমুন্সি বলেছেন, পেঁয়াজের সঙ্কট মোকাবিলায় বিদেশ থেকে সরকার রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করবে। বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি।
অথচ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে রাজশাহীতে এবার রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। তারপর পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি কারও কাম্য ছিল না। অথচ এখনও বন্যার ধুয়ো তুলে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে। এ সম্পর্কে লক্ষ্মীপুর ভাটাপাড়ার ক্রেতা নাসিম আলী বলেন, প্রতি বছরই এ সময় পেঁয়াজের দাম বাড়ে। দেশে পেঁয়াজ নিয়ে হৈ চৈ হয়। কিন্তু অবস্থার কোন পরিবর্তন হয় না। বছর ফিরে আসলে একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, প্রায় প্রতিবছর সিন্ডিকেট তৈরি করে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়। গত বছরও পেঁয়াজ নিয়ে একই অবস্থা হয়েছিল। ঐ সময় দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে দেড় শ থেকে দুই শ টাকা কেজি। ব্যবসায়ীরা ভারতের পেঁয়াজ আসা বন্ধের নামে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেন। এতে পরিস্থির শিকার হন সাধারণ মানুষ।
নগরীর উপশহর নিউমার্কেটের পেঁয়াজবিক্রেতা ইউনুস আলী বলেন, পেঁয়াজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ মসলাজাতীয় পণ্য। এখন মানুষের মাঝে পেঁয়াজের গুরুত্ব খুব বেশি। প্রতিবছর মূল্য বৃদ্ধির ফলে বাজারে পেঁয়াজ নিয়ে ক্রেতাদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। তাই বাজারে স্বাভাবিক রাখতে পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু অসৎ ব্যবসায়ী পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি করে বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজ আমদানিতে পাঁচ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করছি শুল্ক প্রত্যাহার করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে তিন সদস্য প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক তথ্যে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে সরকারি সহায়তায় ও কৃষি বিভাগের পরামর্শে জেলায় এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যেখানে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল ১৪,৯০২ হেক্টর এবং উৎপাদন হয়েছিল ২,২২,৪১২ মেট্রিকটন সেখানে এবার পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ১৬,৭৯১ হেক্টর জমিতে যা গত কয়েক বছরের তুলনায় ১,৮৮৯ হেক্টর বেশি। এ বছর রাজশাহী জেলায় প্রায় ২.৫ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে যা জেলার মোট চাহিদার প্রায় ৫ গুণ। জেলায় চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত পেঁয়াজে দেশের অন্য অঞ্চলের প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ লোকের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।
এদিকে, আগামী রোববার থেকে রাজশাহী নগরীতে ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করবে টিসিবি। রাজশাহী টিসিবির আঞ্চলিক প্রধান অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মতিহার বার্তা ডট কম: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.