রাজশাহীতে পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়াতে তৎপর কৃষক

রাজশাহীতে পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়াতে তৎপর কৃষক

রাজশাহীতে পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়াতে তৎপর কৃষক

এসএম বিশাল: বিগত কয়েক বছর ধরে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে দেশে পেঁয়াজের সংকট দেখা দিচ্ছে। সংকট মোকাবেলায় পেঁয়াজ চাষে গুরুত্ব দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়াতে মনযোগী হয়েছে রাজশাহী জেলার কৃষক ও কৃষি বিভাগ।

জেলায় পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়াতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। পেঁয়াজ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে দফায় দফায় কৃষকদের সাথে উঠান বৈঠক ও বিভিন্ন সমাবেশ করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কৃষকরা যাতে পেঁয়াজের ভালো ফলন পান সেই লক্ষ্যে সার, সেচ ও বালাই ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহীতে তাহিরপুরি জাতের পেঁয়াজ চাষ সবচেয়ে বেশি হয়। চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ১৬ হাজার ৭৯১ হেক্টর জমিতে তাহিরপুরি জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ছিল ১৬ দশমিক ৭৩ টন। মোট উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৮২ হাজার ৭৯৯ মেট্রিক টন।

মোহনপুর উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা ময়েজ উদ্দিন জানান, প্রতি বছর পেঁয়াজের চাষ করি। গত বছর ১ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করেছিলোম। বিভিন্ন কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে পেঁয়াজ চাষ করায় ফলনও ভালো হয়েছিলো। কিন্তু ভরা মৌসুমে আমরা তেমন নায্য দাম পাইনি। তিনি আরও বলেন, বীজ হিসেবে পেয়াঁজ বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যায়। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম ভালো আছে। এবছর কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে আরও ২ বিঘা জমিতে পেয়াঁজের চাষ করবেন বলে জানান তিনি।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামছুল হক বলেন, এবছর জেলায় পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ইতোমধ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। গত বছর জেলায় ১৬ হাজার ৭৯১ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। আগামী মৌসুমে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিচ্ছি। ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কৃষক।

তিনি আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ে পেঁয়াজ লাগানোর জন্য উঠান বৈঠক ও বিভিন্ন সমাবেশের মাধ্যমে তাদেরকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া কৃষকরা যাতে পেঁয়াজের ভালো ফলন পান সেই জন্য সার, সেচ ও পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করা হলে সেখান থেকে উৎপাদিত পেঁয়াজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় বিক্রি করতে পারবে কৃষক। সরকার ও কৃষি মন্ত্রণালয় দেশব্যাপী পেঁয়াজ উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। যা বাস্তবায়ন হলে আগামী দুই বছরের মধ্যে পেঁয়াজে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে।

এদিকে কৃষকরা বলছেন, কৃষি বিভাগ থেকে পেঁয়াজ চাষ প্রশিক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় উৎপাদিত পেঁয়াজ যদি সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করে; তবে পেঁয়াজ চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে।

মতিহার বার্তা ডট কম: ১০ অক্টোবর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply