নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর বেসরকারি শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনিরুজ্জামান স্বাধীনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন আবাসিক ছাত্রীরা। প্রতিষ্ঠানটির মালিক স্বাধীনের দুর্ব্যবহার ও যৌন হয়রানির কারণে ভীতসন্ত্রস্ত তারা। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলে স্বাধীন ও তার কর্মচারীদের রোষানলে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের।
অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সম্প্রতি এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নিয়মনীতি ও শর্ত পূরণ না করায় গত ২ নভেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বন্ধের নির্দেশ দেয়।
জানা গেছে, স্বাধীন নামের মতোই স্বভাবসুলভ আচরণ। রাজশাহী শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের কর্ণধার তিনি। বেসরকারি এই মেডিকেলে ২০১৪ সাল থেকে সাতটা ব্যাচে ১৩৯ জন ছাত্রী ও ৭১ জন ছাত্র ভর্তি পর আবাসন সুবিধা পায় তারা। কিন্তু এসব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব যার হাতে খোদ তার কাছে সবচেয়ে অনিরাপদ শিক্ষার্থীরা।
আবাসিক ছাত্রীদের অভিযোগ, রাতে বিনা নোটিশে মেয়েদের কক্ষে ঢুকে যৌন হয়রানি করত প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বাধীন। এ ছাড়া টয়লেটে গোপনে ক্যামেরা রেখে ছাত্রীদের নগ্ন ছবি তোলার অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি চরম ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।
এক শিক্ষার্থী বলেন, রাত ১২টার পর তার রুমে মেয়েদের ডাকে। তখন ২-১ জন সঙ্গে যেতে চাইলে তিনি আপত্তি করেন। যাকে ডাকা হবে তাকে একা যেতে হয়।
এক অভিভাবক বলেন, আমরা কঠিন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ সব অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সচিব মো. আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর কোনও ধরনের অত্যাচার হয়ে থাকলে, বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় দেখা হবে।
এদিকে গত শুক্রবার শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় পর মামলার প্রেক্ষিতে দুজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটনের পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক। তিনি জানান, আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে যে কোনও ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া লাগলে আমরা নেব।
গত শুক্রবার হলে প্রবেশ করতে চাইলে শাহ মখদুম কলেজের কর্মচারীরা বহিরাগতদের নিয়ে হামলা চালিয়ে প্রায় ১২ জন শিক্ষার্থীকে আহত করে।
প্রতিষ্ঠানের মালিক স্বাধীন পলাতক থাকার পাশাপাশি মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধীন অন্য বেসরকারি মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের দ্রুত মাইগ্রেশনের ব্যবস্থার নির্দেশ দেয়।
মতিহার বার্তা ডট কম: ২৯ নভেম্বর ২০২০
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.