অনলাইন ডেস্ক: চিনের আধিপত্য মোকাবিলায় ভারতকে ‘অস্ত্র’ করতে চেয়েছিল আমেরিকা। মঙ্গলবার সামনে আসা ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের একটি নথি থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে। চিনের মোকাবিলায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দৃঢ় করার কথা বলা হয়েছে ওয়াশিংটনের ওই পরিকল্পনায়।
‘ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য আমেরিকার কৌশলগত পরিকাঠামো’ শীর্ষক ওই নথিটি প্রকাশ করেন সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বেজিংয়ের প্রভাব খর্ব করতে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাম্প ওই পরিকল্পনা অনুমোদন করেছিলেন।
ও’ব্রায়েন মঙ্গলবার বলেন, ‘‘চিনের ক্ষমতার আস্ফালনে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই ২০১৮ সালে আমরা পরবর্তী তিন বছরের কৌশলগত রূপরেখা তৈরিতে বেজিংয়ের প্রভাব প্রতিহত করার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে চেয়েছি।’’ তাঁর অভিযোগ, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ভারতের উপর চাপ বাড়াচ্ছে চিন। পাশাপাশি, জোর করে তাইওয়ানকে মূল চিনা ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির এই আচরণ পুরো অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি করছে।
২০১৮ সালে তৈরি ওই নথিতে ভারতের বিরুদ্ধে চিনা সেনার সম্ভাব্য আগ্রাসনের আশঙ্কাও প্রকাশ হয়েছিল। ঘটনাচক্রে, ২০২০ সালের মে মাসে পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি)-য় মিলে গিয়েছে সেই পূর্বাভাস। চিনের পাশাপাশি আরেক কমিউনিস্ট দেশ উত্তর কোরিয়ার কারণে এশিয়ার নিরাপত্তা সঙ্কটের কথাও বলা হয়েছে ওই নথিতে।
রাষ্ট্রপতি পদে জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার এক সপ্তাহ আগে ওই নথি প্রকাশ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন আমেরিকার বিদেশনীতি এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের একাংশ। কারণ, সেখানে বেজিংয়ের প্রভাব বৃদ্ধিতে ওয়াশিংটনের স্বার্থ ক্ষুন্ন হওয়ার প্রসঙ্গ রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে, চিনের মোকাবিলায় ভারতের পাশাপাশি জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলিকে নিয়ে ‘কৌশলগত অক্ষ’ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথাও। ফলে ট্রাম্পের নীতির কট্টর সমালোচক হলেও বাইডেনের পক্ষে সুপারিশগুলি উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না বলেই তাঁদের ধারণা।
মতিহার বার্তা ডট কম: ১৩ জানুয়ারী ২০২১
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.