রাজশাহীতে কৃষকের জমিতে একটি শসার ওজন ২কেজি

রাজশাহীতে কৃষকের জমিতে একটি শসার ওজন ২কেজি

রাজশাহীতে কৃষকের জমিতে একটি শসার ওজন ২কেজি
রাজশাহীতে কৃষকের জমিতে একটি শসার ওজন ২কেজি

আহম্মদ মোস্তফা শিমুল : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বকুল হোসেন নামের এক কৃষক প্রথমবারের মতো জমিতে মাচায় শসা চাষ করেছেন। আর প্রথমবারই বকুলের জমিতে একটি শসার ওজন সর্বোচ্চ দুই কেজি পর্যন্ত পেয়েছেন। এই জাতের যেসব শসা বীজ সংগ্রহের জন্য রাখা হয়, তার ওজন আরও বেশি।

কৃষক বকুলের শসাক্ষেত রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বোগদামারী গ্রামে।

বকুল জানিয়েছেন, কুমিল্লা থেকে তিনি এই শসার বীজ আনিয়েছেন। শসা উৎপাদনের পর বিক্রির জন্য কুমিল্লাতেই পাঠানো হচ্ছে। সেখানে এই শসার চাহিদা বেশ ভাল। রাজশাহীতে এই শসার তেমন চাহিদা নেই।

বকুল জানান, তার জমির পরিমাণ দেড় বিঘা। বর্গা নেয়া এ জমিতে শসা চাষে সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। জমিতে বীজ বপনের ৬০ দিনের মধ্যে শসা ওঠা শুরু হয়েছে।

এক সপ্তাহ আগে প্রথমবার শসা তুলেছেন ১২ মণ। সবই পাঠানো হয়েছে কুমিল্লায়। সেবার দাম পেয়েছেন কেজিপ্রতি ৫৮ টাকা। চার দিন পর পর জমি থেকে শসা তোলা যায়। ইতোমধ্যে তার জমি থেকে ২০ মণ শসা তোলা হয়েছে। হাতে পেয়েছেন ২৫ হাজার টাকা।

মঙ্গলবার বকুলের জমি থেকে আনুমানিক ৩০ মণ শসা ওঠে।

বকুল জানান, তিনি তার জমির বড় আকারের একটি শসা ওজন করেন। দেখেন, এর ওজন দুই কেজি। তবে মাঝারি আকারের শসা গুলোই জমি থেকে তোলা হয়। বকুল এমন একটি শসা ওজন করে দেখালেন। ওজন হলো এক কেজি ৮০০ গ্রাম। শসাটি ভেঙে বকুল দেখালেন, ভেতরে বীজ পুষ্টই হয়নি।

বকুল বলেন, জমিতে রাখলে এই শসা আরও বড় হবে। কিন্তু একটু ছোট থাকতেই তোলা হয়। আর বীজ সংগ্রহের জন্য যেসব শসা রাখা হয় তার একটির ওজন তিন থেকে সাড়ে চার কেজি পর্যন্ত হয়।

বকুল আরও জানান, আকারে বড় হলেও এই শসা হাইব্রিড নয়। এটি কুমিল্লার স্থানীয় একটি জাত। কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা নিমাই সরদার গোদাগাড়ীর বোগদামারী গ্রামে এসে টমেটো চাষ করেন। তিনিই এই শসার বীজের সন্ধান দেন। কুমিল্লা থেকে বীজও এনে দেন। বকুল চাষাবাদ শুরু করেন।

এই শসা কোন হাইব্রিড জাত নয়। কুমিল্লায় এটি একটি প্রচলিত জাত। তার দেশে এই শসার চাহিদাও খুব। কিন্তু রাজশাহীর মানুষ ‘লালিম’ ভেবে কিনতে চান না। কুমিল্লায় নিমাই সরদারেরও তিন বিঘা জমিতে এই শসা চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিন লাখ টাকার শসা বিক্রি করা হয়েছে।

নিমাই জানান, বিঘাপ্রতি এই শসার উৎপাদন ২৫০ থেকে ৩০০ মণ। দাম ভাল থাকলে কৃষক খুব লাভবান হন। সে কারণেই তিনি বকুলকে এই শসা চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। বকুল বলেন, নিমাইয়ের পরামর্শ অনুযায়ীই তিনি শসা চাষ করেন। শসা গাছের কোন সমস্যা হলে তিনি নিমাই সরদারেরই পরামর্শ নিয়েছেন। তাদের এলাকায় কৃষি কর্মকর্তার খোঁজ পাওয়া যায় না। ফোন করলেও আসেন না।

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মতিয়র রহমান বলেন, আমি এখনও বোগদামারীর ওই দিকে যাইনি। সেখানে এত বড় আকারের শসা চাষ হচ্ছে সেটাও জানা নেই। আমি ওই দিকে গেলে হয়ত বলতে পারতাম। কৃষকের যদি কোন প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা তার পাশে থাকব বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

মতিহার বার্তা ডট কম: ২৬ জানুয়ারী ২০২১

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply