বদলির আট মাস পেরুলেও এসআই সাহাবুল মতিহারেই

বদলির আট মাস পেরুলেও এসআই সাহাবুল মতিহারেই

বদলির আট মাস পেরুলেও এসআই সাহাবুল মতিহারেই
বদলির আট মাস পেরুলেও এসআই সাহাবুল মতিহারেই

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী নগরীর মতিহার থানা এলাকায় মাদকের কারবার বেড়েই চলেছে। পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তা ও সদস্যের সাথে চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ীদের একটি অংশের বিশেষ সখ্যতা থাকায় মাদকের কারবার বাড়ছে- এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তারপরেও এ অবস্থার পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এদিকে, মতিহার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাহাবুল তার বদলির আট মাস পেরুলেও এখনো একই কর্মস্থলে রয়েছেন বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এসআই সাহাবুলের বিরুদ্ধে কিছু মাদক ব্যবসায়ীর সাথে বিশেষ সখ্যতার অভিযোগ রয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তবে তার কৃতিত্বও রয়েছে। বিভিন্ন কাজের স্বীকৃতি হিসেবে আটবারের বেশি বেষ্ট অফিসার হিসেবে পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মতিহার থানা এলাকার মহব্বতের ঘাট, সাতবাড়িয়া, ডাসমারী, চর-শ্যামপুর মিজানের মোড় এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে মাসোহারা আদায়, অর্থের বিনিময়ে ওয়ারেন্টের আসামিদের গ্রেফতার এড়াতে সুযোগ প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে এসআই সাহাবুলের বিরুদ্ধে। এদিকে আরেকটি সূত্র বলছে, তার বিরুদ্ধে এধরণের কর্মকা-ের অভিযোগ বাড়তে থাকায় খোদ থানার বেশ কিছু কর্মকর্তা ও সদস্য তার ওপর নাখোশ। নগরীর রাজপাড়া থানাধীন টুলটুলিপাড়া এলাকায় জমি কিনে দ্বিতল বাড়ি নির্মাণ করছেন বলে জানা গেছে।

এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে এসআই সাহাবুল বলেন, পুরো মতিহার থানায় আমি কী একাই আছি, না অন্য কেউও আছে। তাদেরকেও বলেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

এদিকে, একাধিক মাদক মামলার আসামী ডাসমারী এলাকার মৃত মুক্তারের ছেলে পালা। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হলেও প্রকাশ্যে সে নিজ এলাকায় দাপটের সাথে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ জানলেও তার ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তার পার্টনার চরের ইমরানের ছেলে আক্কাস। সেও অন্তত ৮-১০টি ওয়ারেন্ট নিয়ে চরেই অবস্থান করছে।

মতিহার থানা এলাকার উল্লেখযোগ্য মাদক কারবারীদের মধ্যে রয়েছে- ডাসমারীর মৃত মুক্তারের ছেলে পালা। তার সহযোগী মাদক কারবারী সাবদুল, কামরুল, সোহেল (জানু), সুমন, রশিদ, সাকিব, শাহজামাল, জাকা ও মিলন। নাজিমের ছেলে মাদক কারবারী জামাল। তার সহযোগীরা হলো- জাকা, জামিল, সাক্কার, রফিক, ছাদেক ও মাসুম। একই এলাকার মালেক, তার স্ত্রী হানুফা, তার ছেলে হাবিল। তেল রফিক ও তার স্ত্রী। ডাসামরী গোরস্থান মোড়ের চান্দু বাবু।
জাহাজ ঘাট এলাকার মৃত ইসাহাকের ছেলে বকুল। মহব্বতের ঘাটের মাদক কারবারী জিল্লুর ছেলে পিন্টু ও টিটু, জাহাঙ্গীর, সজিব, জি¦ন ছাইদুর, কানা রফিক, রিয়াজ।

সুরাপানের মোড় এলাকার অলি, জনি, সুমন। এদের মধ্যে অন্যতম অলি ইয়াবা, হেরোইনের ডিলার হিসেবে কাজ করলেও ধরা ছোয়ার বাইরে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্ষেত্র বিশেষে অলি নিজকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়েও থাকে। তার সহযোগীরা হলো, বকুল, জনি, সুমন, প্রিয়া।

চরশ্যামপুর এলাকায় মাদক কারবারীদের নেতা মনিরুল। কিন্তু সে নিজেকে কখনো কখনো এমপি এবং মেয়রের লোক বলেও পরিচয় দিয়ে থাকে। সম্প্রতি মনিরুলের ভাই আসলাম ২০ বোতল ফেনসিডিলসহ ডিবি পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। এছাড়া বোন চাম্পা ওই এলাকার বড় মাদক কারবারীদের মধ্যে একজন। মাদক মামলা রয়েছে তার দুই ভাসতির নামেও।

মাদক কারবারীদের মধ্যে আরো রয়েছে- ওই এলাকার হামিদের ছেলে ইয়াসিন, নেদার মন্ডলের ছেলে রবিউল, আকতার, মিঠু, কামরুল, হালিম, সুজন, সুমন, কাদো, শাহীন, রুপচাঁনসহ শতাধিক খুচরা ও পাইকারী মাদক কারবারী।

এ ব্যাপারে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের কোনো সদস্য মাদক কারবারে জড়িত থাকলে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না। তবে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলে তা জানানোর জন্য বলেন তিনি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসআই সাহাবুলের বদলির বিষয়টি আমি বলতে পারবো না। এ ব্যাপারে জানতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

জানতে চাইলে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, এসআই সাহাবুলের বদলির বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিলে বিষয়টি জানতে পারবো।

মতিহার বার্তা / এম আর

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply