অনলাইন ডেস্ক: করোনার টিকা নেওয়ার পরও কারো কারো আক্রান্ত হওয়ার খবরে যখন শঙ্কার ঢালপালা ছড়াচ্ছিল তখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, কোভিড টিকা নেওয়ার কারণে কারো আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে কোভিশিল্ড
টিকার দুটি ডোজ নেওয়ার ন্যূনতম ১৪ দিন পর থেকে সর্বোচ্চ প্রতিরোধসক্ষমতা তৈরি হয় শরীরে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট কোভিশিল্ড নামে উৎপাদন করছে। বাংলাদেশ সেরামের মাধ্যমে সেই টিকা আমদানি করছে। বহু মানুষকে এই টিকা ইতিমধ্যে দেওয়া হয়ে গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গণটিকাদান শুরু হওয়ার পর থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৪০ লাখ ৫৭ হাজার ৯০৫ জন। আর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন মোট ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৯৪০ জন। এর মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঘটনা পাওয়া গেছে ৬৯৬ জনের মধ্যে।
টিকা নেওয়ার পর এ পর্যন্ত তিনজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার সাত থেকে ১৬ দিনের মধ্যে আক্রান্ত হন।
টিকা নেওয়ার পরও কোভিড-১৯ পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে একজন সচিবের। টিকা নেওয়ার ১২ দিন পর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীন করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়েছেন।
টিকা নেওয়ার পর সচিবের করোনা থেকে সুরক্ষা না পাওয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেছেন, সচিবের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি তাদের এখনও জানা নেই। তবে টিকা নেওয়ার পরও সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা সবার ক্ষেত্রে পুরোপুরি দূর হয় না।
তিনি বলেন, টিকা দিলে ট্রান্সমিশন কমে যাবে। কমানোর জন্যই টিকা দেওয়া। তবে সংক্রমণ হতে পারে। কারণ টিকা শতভাগ কার্যকর হবে এমন কথা তো কোনো টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানই বলেনি।
টিকা নেওয়ার পরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, যারা টিকা নিচ্ছেন, তাদের একটি অংশও আক্রান্ত হতে পারেন। এছাড়া টিকার এক ডোজেও পুরোপুরি কাজ হবে না। দুই ডোজ দিতে হবে। দুই ডোজ দেওয়ার পরই টিকা কতভাগ সংক্রমণ প্রতিরোধ করবে তা বোঝা যাবে।
টিকা নেওয়ার পরও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই করোনার টিকা নেওয়ার পরও মাস্ক ব্যবহারসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার তাগিদ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট নজরুল ইসলাম বলেন, শরীরে করোনার জীবাণু প্রবেশের পর যদি কেউ টিকা নেন, তাহলে সেটা কাজ না–ও করতে পারে। কারণ, ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশের পর এর শক্তিকাল ১৫ দিন। টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে। তবে কারও যদি নানা শারীরিক সমস্যা বা ইমিউনিটি সিস্টেম দুর্বল থাকে, তাহলে তিনি আবারও আক্রান্ত হতে পারেন। তবে সে সংখ্যা ১০ হাজারে একজন হতে পারে।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.