রাজশাহীতে মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহার করে মাদ্রাসা দখলের পাঁয়তারা

রাজশাহীতে মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহার করে মাদ্রাসা দখলের পাঁয়তারা

রাজশাহীতে মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহার করে মাদ্রাসা দখলের পাঁয়তারা
রাজশাহীতে মুক্তিযোদ্ধার নাম ব্যবহার করে মাদ্রাসা দখলের পাঁয়তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর পবা উপজেলার খোলাবোনা আলিম মাদ্রাসা দখলে নিতে এবং প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টির জন্য এলাকার একটি কুচক্রি মহল নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ নতুন ভবন নির্মাণ করছে- এমন স্পর্শকাতর ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব জমিতে নতুন ভবন নির্মাণেও বাধা সৃষ্টি করে চলেছে কুচক্রি মহলটি। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নে অবস্থিত খোলাবোনা আলিম মাদ্রাসা। মাদ্রাসাটির মোট জমির পরিমাণ এক একর ১৪ শতক। মাদ্রাসাটির উত্তরে খোলাবোনা হাফেজিয়া মাদ্রাসার অবস্থান। আর খোলাবোনা আলিম মাদ্রাসার পূর্বদিকে প্রতিষ্ঠানটির নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। একইদিকে ব্যক্তি মালিকানাধীন পারিবারিক গোরস্থান। নির্মিতব্য নতুন ভবন থেকে গোরস্থানের দূরত প্রায়¡ ১০ফুট। আর এই গোরস্থানেই একজন মুক্তিযোদ্ধার কবর রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জোর দিয়েই বলছেন, মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর মাদ্রাসার নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে বলে যে অভিযোগ বা বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হচ্ছে তা সত্য নয়। এলাকারই একটি স্বার্থান্বেষী মহল অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই এই মিথ্যা ও বিভ্রান্তির অভিযোগ ও প্রচারণা চালাচ্ছে বলে দাবি করেন তারা।

এ ব্যাপারে খোলাবোনা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো: মিকাইল হোসেন জানান, এলাকার একটি কুচক্রি মহল ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে মাদ্রাসার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিলেন। সম্প্রতি এই মামলায় আদালত আমাদের পক্ষ রায় দিয়েছেন। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর মাদ্রাসার নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে বলে যে অভিযোগ বা বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হচ্ছে তা সত্য নয়। মাদ্রাসার নিজস্ব জমিতেই নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। আর পারিবারিক গোরস্থানেই মুক্তিযোদ্ধার কবর রয়েছে। এ নিয়ে অযথা হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

খোলাবোনা আলিম মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনার কমিটির সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর মাদ্রাসার ভবন নির্মাণ করার প্রশ্নই আসে না। কারণ মাদ্রাসার নিজস্ব জমিতিইে ভবন করা হচ্ছে। শত্রুতামূলকভাবে ভবন নির্মাণে বাধা প্রদান করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

জানতে চাইলে পবা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমা-ার মো: কামরুজ্জামান বলেন, এলাকার একটি স্বার্থান্বেষী মহল মাদ্রাসার নিজস্ব জমিতে নতুন ভবন নির্মাণে বাধা দিচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর মাদ্রাসার ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে- এ অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দুষ্টু লোকেরা মাদ্রাসার বিরুদ্ধে অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধার কবরের ওপর ইমারত নির্মাণ করা হলে আমি নিজেই বাধা দিতাম। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না।

উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ও ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য সাইদুর রহমান বাদল বলেন, খোলাবোনা আলিম মাদ্রাসা দখলে নিতে এবং প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টির জন্য এলাকার একটি মহল নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন- আব্দুল হাই, সাবেক ওয়ার্ড সদস্য বাসেত আলী, তাহের ঠাকুর প্রমুখ। তিনি আরো বলেন, এলাকায় কুটবুদ্ধির মাধ্যমে মানুষের ক্ষতিসাধন ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা তাহের ঠাকুরের চিরাচরিত অভ্যাস। এ কারণে ২০১৪ সালে তাকে পিটিয়ে হা-পা ভেঙ্গে এলাকা ছাড়া করেছিলেন এলাকাবাসী। বছর দুয়েক আগে তিনি আবারও এলাকায় ফিরে এসে একই কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছেন। ফলে তিনি মাদ্রাসা নিয়ে আবারও নতুনভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল হাই, সাবেক ওয়ার্ড সদস্য বাসেত আলী ও তাহের ঠাকুরের বক্তব্য নিতে এলাকায় গেলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

মতিহার বার্তা / এফ কে

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply