রাজশাহীতে পরিত্যক্ত বোতলে তৈরি হচ্ছে বাড়ি

রাজশাহীতে পরিত্যক্ত বোতলে তৈরি হচ্ছে বাড়ি

রাজশাহীতে পরিত্যক্ত বোতলে তৈরি হচ্ছে বাড়ি
রাজশাহীতে পরিত্যক্ত বোতলে তৈরি হচ্ছে বাড়ি

অনলাইন ডেস্ক: পুঠিয়ায় প্রথম পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বাড়ি। নির্মাণের শুরু থেকে প্রতিদিন আশেপাশের উৎসক লোকজন ওই বাড়ি দেখতে আসছেন। বাড়ির মালিক আনোয়ার পারভেজ দাবি করছেন, অল্প খরচে আধুনিক মানের সকল সুবিধাসহ দৃষ্টিনন্দন এই বাড়িতে বসবাসে ইট-পাথরের চেয়ে বেশি আরামদায়ক হবে।

বোতল বাড়িটি তৈরি হচ্ছে পুঠিয়া উপজেলার ভালুকগাছি ইউনিয়নের গোটিয়া গ্রামের খবির আলী মোল্লার ভিটায়। খবির আলী মোল্লা বলেন, তিনি একজন কৃষক মানুষ। তিন মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে তার পরিবার। মেয়েদের বিয়ে হয়ে স্বামীর বাড়ি চলে গেছে। ছেলে একটি কোম্পানিতে চাকরি করে। ছেলে প্রথম যখন বোতল দিয়ে বাড়ি করবে বলেছে তখন অনেক টাকা লোকসান হবে ভেবে তার মন খারাপ লেগেছিল।

এখন তাদের বাড়ি তৈরি দেখতে বিভিন্ন লোকজন আসছেন। সবাই এখন ভালো বলছেন তাই অনেক ভালো লাগে। সময় পেলে নির্মাণ শ্রমিকদের সাথে আমি ও আমার পরিবারের লোকজন বোতলের মধ্যে বালু ভর্তি করি।

বাড়ির মালিক আনোয়ার পারভেজ বলেন, আমি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করি। চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় কাজে যেতে হয়। আমি প্লাস্টিকের বোতলে তৈরি করা বাড়ি সিলেট ও কুমিল্লায় দেখতে পাই। সেখান থেকেই উৎসাহ জাগে। এরপর একজন স্থপতি বড় ভাইয়ের পরামর্শে আমি পরিত্যক্ত বোতল সংগ্রহের পর নির্মাণ কাজ শুরু করেছি। আর এই বোতল গুলো আমাদের উপজেলার পাশাপাশি নাটোর জেলার বিভিন্ন এলাকার ভাঙারির দোকান থেকে ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে কিনে আনছি।

রফিকুল ইসলাম নামে এক স্থপতি বলেন, প্লাস্টিক বোতলের দীর্ঘ আয়ুকাল। বোতল এমনিতেই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক। পরিত্যক্ত বোতলগুলো দিয়ে নির্মাণ কাজ করলে আশেপাশের পরিবেশ নষ্ট থেকে রক্ষা পাবে। আর বোতলে তৈরি বাড়ি ভূমিকম্পন সহায়ক। বোতলের ভেতর বালি থাকায় বৈদ্যুতিক শটসার্কিট ও অগ্নিকাণ্ডের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। আর ঘরের ভেতর পলিশনমুক্ত পরিবেশ ও শীত গরম সহনশীল হয়।

বাড়ি নির্মাণ কারিগর নজরুল ইসলাম বলেন, বোতল দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করা এটা আমার প্রথম কাজ। প্রায় ১৮০০ স্কয়ার ফিটের এই বাড়ির মধ্যে থাকছে ৪টি বেডরুম, একটি ডায়নিং রুম, একটি রান্নাঘর ও পৃথক দু’টি বাথরুম। একতলা বিশিষ্ট এই বাড়িটি দৃষ্টিনন্দন করতে উপরে কারুকাজ সম্বলিত রঙ্গীন টিন ব্যবহার করা হবে। আর এই বাড়িটি নির্মাণ করতে প্রায় ৪২ থেকে ৪৫ হাজার বোতল লাগবে। এর মধ্যে ২লিঃ, ১লিঃ ও আধা লিটারের বিভিন্ন রং এর বোতল ব্যবহার করা হচ্ছে।

ভালুকগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাকবীর হাসান বলেন, আমার জানামতে রাজশাহী জেলায় এটাই প্রথম বোতল দিয়ে বসবাসের জন্য বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। শুনেছি ওই বাড়ির নির্মাণ কাজ দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎসক লোকজন আসছেন। নির্মাণ কাজ শেষ হলে এই এলাকায় এটাই সবচেয়ে বেশি দৃষ্টিনন্দন বাড়ি হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান বলেন, লোকমুখে শুনেছি এই উপজেলায় প্লাস্টিকের পরিত্যক্ত বোতল দিয়ে একটি বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে নির্মাণ কাজ এখনো দেখা হয়নি।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply