বাঘায় চাল-তরমুজ প্রতি কেজি ৬০ টাকা!

বাঘায় চাল-তরমুজ প্রতি কেজি ৬০ টাকা!

বাঘায় চাল-তরমুজ প্রতি কেজি ৬০ টাকা!
বাঘায় চাল-তরমুজ প্রতি কেজি ৬০ টাকা!

বাঘা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘায় তীব্র তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমের কারনে নাকাল জনজীবন। প্রচন্ড গরমে দিন শেষে ত্ষ্ণৃা নিবারনে তাই, ইফতারে রসালো ফল তরমুজই পছন্দ করছেন রোজাদারগন । কিন্তু তৃষ্ণা নিবারনে অদ্বিতীয় মৌসুমি এ ফলের আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে এখন আর ফলটির স্বাদ নিতে পারছেন না নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ।

গ্রীষ্মের শুরুতেই এ ফলটির সরবরাহ প্রচুর থাকলেও রমজান মাসে অতিরিক্ত চাহিদার সুযোগটিকে কাজে লাগাচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। তারা তরমুজের দাম হাঁকাচ্ছেন ইচ্ছেমতো। এখানকার বাজারে এপ্রিলেও তরমুজের দাম ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। কিন্তু সেটি এখন বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। ফলে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে রমজানে দাম সহনশীল রাখার যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিলো তা মুখ থুবড়ে পড়েছেন। রমজানের শুরু থেকেই ব্যবসায়িরা সে প্রতিশ্রুতি থেকে সরে দাঁড়ান । তারা অধিক মুনাফার জন্য সিন্ডিকেট করে কেজি দরে তরমুজ বিক্রয়ের পথ বেছে নেন। ফলে এখানে এখন এক কেজি তরমুজ কিনতে হলে এক কেজি উন্নতমানের চালের দাম গুনতে হচ্ছে।

দাম বাড়ার কারন এবং কেজিতে বিক্রয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বাঘা বঙ্গবন্ধু চত্তরের প্রবীন ব্যবসায়ী নাজিমুদ্দিন বলেন, এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়নি। এরপর প্রচন্ড রোদ ও গরম পড়ায় কৃষকের নিকট থেকেই বেশি দামে তরমুজ কিনতে হচ্ছে। তাই কম দামে বিক্রির কোন সুযোগ নেই।

বাঘা বাজারের আরেক ব্যবসায়ী মিলন বলেন, এমনিতেই এ বছর প্রচন্ড খরা তার ওপর ‘লকডাউনের’ কারণে বাইরে থেকে তরমুজ আসতে পারছে না। যে কারণে মোকামেই তাদের বেশি টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। দোকান ভাড়া ও পরিবহন খরচ ধরে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি না করলে কোনো লাভ হচ্ছে না। এখানে আমাদের কিছু করার নেই বলেও উল্লেখ করেন এ ব্যবসায়ী।

ষাটর্ধ ভ্যানচালক মোজাম্মেল বলেন, আমার পরিবারে ৮ জন সদস্য । সবাই তরমুজ ভীষন পছন্দ করে। ছোট নাতিটা কয়েকদিন থেকেই তরমুজ খেতে চাচ্ছে। মনে করেছিলাম আজকে যা আয় হবে সেটা দিয়ে একটি তরমুজ কিনব। কিন্তু তরমুজের দাম আর চালের দাম সোমান সোমান। প্রতি কেজি ৬০ টাকা । এখন চাল কিনব; না, নাতির জন্য তরমুজ কিনব বুঝতে পারছিনা।

উপজেলার চন্ডিপুর এলাকার নবাব আলী, মনিগ্রাম এলাকার আফাজ আলী, জোতরাঘব এলাকার ইদ্রিস আলী, আলাইপুর এলাকার ফারুক হোসেন, আব্দুল হক সহ অনেকেই অভিযোগের সুরে বলেন, তরমুজ একটি বড় আকৃতির ওযনবিশিষ্ট মৌসুমি ফল। এ ফল কেজি দরে বিক্রি করা মোটেই ঠিক নয়। কৃষকের নিকট থেকে অল্প দামে পিচ হিসেবে কিনে আড়ৎদাররা সিন্ডিকেট করে কেজি দরে বিক্রি করে এর দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে করে একটি তরমুজের দাম পাঁচশ থেকে সাতশ টাকা পড়ছে। করোনাকালীন এই দুঃসময়ে এত টাকা দিয়ে এ ফলটি অনেকের পক্ষেই কেনা সম্ভব হচ্ছেনা। অনতীবিলম্বে বিষয়টিতে প্রশাসনিক নজরদারি প্রয়োজন।

বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পাপিয়া সুলতানা বলেন, ‘লকডাউনের জন্য জারিকৃত সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কৃষিপণ্য হিসেবে তরমুজ পরিবহনে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কৃষকরা নির্বিঘ্নে তরমুজ বাজারজাত করতে পারবেন। তবে, ব্যবসায়ীরা নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত দামে তরমুজ বিক্রয় করছেন বিষয়টি অবগত হলাম । এ ব্যাপারে বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply