মোহাঃ আসলাম আলী : রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ইসলামী একাডেমী স্কুল এণ্ড কলেজের (কারিগরী ও কৃষি) বিরুদ্ধে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে অবৈধভাবে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেণ্ট প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি টাকা না দিলে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেণ্ট দেওয়া হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানটির তরফ থেকে। আবার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হলেও কোনো রশিদ বা ডকুমেণ্টস দেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে অভিভাবকদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগও উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে মঙ্গলবার সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মিজানুর রহমান বাঘা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।
একইসঙ্গে বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে অভিযোগের অনুলিপি দিয়েছেন মিজানুর রহমান। এছাড়া এ ঘটনায় পৃথকভাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহয়িার আলম বরাবর আরেক লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে উপজেলার মশিদপুর গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান উল্লেখ করেন, আমি পেশায় একজন সাধারণ কৃষক। আমার ছেলে মো: হাসানুর রহমান (দিনার) ইসলামী একাডেমী স্কুল এণ্ড কলেজের (কারিগরী ও কৃষি) সপ্তম শ্রেণির নিয়মিত ছাত্র। কিন্তু দু:খের বিষয় করোনাকালীন এই দুর্যোগের মধ্যে আমার ছেলে ১৩ তম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেণ্ট নিতে মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানে যায়। এসময় তাকে বলা হয়, অ্যাসাইনমেণ্টসহ প্রতিষ্ঠানের বেতন, সেশনচার্জ, স্কাউট ফি, বিদ্যুৎ ও আইসিটি খরচ বাবদ ৬৫৫/= (ছয়শ’ পঞ্চান্ন) টাকা জমা দিতে হবে। অন্যথায় অ্যাসাইনমেণ্ট দেওয়া যাবে না। পরে বাধ্য হয়ে অন্যের নিকট থেকে ধারকর্জ করে প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী টাকা পরিশোধ করে আমার ছেলের অ্যাসাইনমেণ্ট গ্রহণ করি। যা আমার জন্য এই মুহুর্তে আর্থিকভাবে অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, এ ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী অভিভাবক মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ আমার কাছ থেকে ছেলের অ্যাসাইনমেণ্ট বাবদ টাকা নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি আমার সঙ্গে অসদাচরণ করেছেন। আমি তদন্তসাপেক্ষে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: আবুল কাশেম ওবাইদকে পাওয়া যায়নি।
তবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মাহমুদুল হাসান জানান, এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী করোনাকালে প্রতিষ্ঠানের বেতন নেয়া যাবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেণ্ট বাবদ কোনো টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসলামী একাডেমী স্কুল এণ্ড কলেজের (কারিগরী ও কৃষি) প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মণ্টু বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এখন আমি বাইরে আছি। বাঘায় ফিরে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বিষয়টি সমাধান করা হবে।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.