মিজানুর রহমান: সূর্যের মধ্যেকার এই রহস্যে ঘেরা অঞ্চলটির নাম ক্রোমোস্ফিয়ার। এটি সৌর পরিমণ্ডলের একটি স্তর। যার সূচনা সূর্যপৃষ্ঠ থেকে ৪০০ কিলোমিটার উঁচুতে। ক্রোমোস্ফিয়ারে তাপমাত্রার তারতম্য রয়েছে।
সূর্যপৃষ্ঠে রহস্যময় এক এলাকার খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা। সেখানে গেলেই নাকি অদ্ভুত ভাবে কমে আসে তাপমাত্রার পারদ। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন (এনএসও)-এর শক্তিশালী একটি সোলার টেলিস্কোপ এই তথ্য সংগ্রহ করেছে বলে খবর।
জানা গিয়েছে, সূর্যের মধ্যেকার এই রহস্যে ঘেরা অঞ্চলটির নাম ক্রোমোস্ফিয়ার। এটি সৌর পরিমণ্ডলের একটি স্তর, যার সূচনা সূর্যপৃষ্ঠ থেকে ৪০০ কিলোমিটার উঁচুতে। ১২০০ কিলোমিটার উচ্চতায় এই স্তরের সর্বোচ্চ সীমা।
ক্রোমোস্ফিয়ারের মধ্যে তাপমাত্রার তারতম্য রয়েছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, সাধারণত সূর্যের ক্রোমোস্ফিয়ারের নীচের দিকে তাপমাত্রা থাকে তিন হাজার ৭০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর উপরের দিকের তাপমাত্রা থাকে সাত হাজার ৭০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি।
কিন্তু এই স্তরের একটি বিশেষত্ব খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, সূর্যের এই বিশেষ স্তরটি থেকে দূরে সরে গেলে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। যেখানে সূর্যের অন্যান্য স্তরগুলির ক্ষেত্রে ঘটে বিপরীত ঘটনা।
সে সব স্তর থেকে সূর্যের কেন্দ্রের আরও কাছে গেলে তাপমাত্রা বাড়ে। দূরে গেলে গরম তুলনামূলক কমে। যে হেতু সূর্যকেন্দ্রকেই সবচেয়ে উষ্ণ বলে ধরা হয়, তাই ক্রোমোস্ফিয়ারে তাপমাত্রা হ্রাস-বৃদ্ধির এই তারতম্য মহাকাশ গবেষকদের ভাবিয়ে তুলেছে।
এনএসও-র ‘দ্য ড্যানিয়েল কে. ইনোউয়ে সোলার টেলিস্কোপ’-কে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সৌর টেলিস্কোপ হিসাবে দাবি করা হয়। নানা সময়ে সূর্যপৃষ্ঠের নানা তথ্য বা অজানা ঘটনা এই টেলিস্কোপের মাধ্যমে জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা। সেই টেলিস্কোপ সূর্যপৃষ্ঠে ক্রোমোস্ফিয়ারের রহস্যময় এই এলাকার খোঁজ দিয়েছে।
গত ৩ জুন টেলিস্কোপের ক্যামেরায় ওঠা সেই ছবি প্রকাশ করেছে এনএসও।সূর্যের মধ্যেকার অজানা ঘটনাবলী প্রকাশ্যে আনা, নক্ষত্রের অজানা দিক পৃথিবীর মানুষকে চেনানোই এনএসও-র সৌর টেলিস্কোপের মূল লক্ষ্য। সংস্থার ডিরেক্টর সেতুরামন পঞ্চানাথন বলেন, ‘‘দ্য ড্যানিয়েল কে. ইনোউয়ে সোলার টেলিস্কোপ বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সৌর টেলিস্কোপ।
আমরা সূর্যকে যে ভাবে চিনি, তার সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত যা জানি, সে ধারণা বদলে দিতে পারে এই টেলিস্কোপ।’’ সৌরঝড়, সূর্য থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মতো ঘটনাগুলিকে আরও ভাল ভাবে বুঝতে সাহায্য করবে এই সোলার টেলিস্কোপ, দাবি বিজ্ঞানীদের।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.