ফারহানা জেরিন: অনেকেই এখন তেলমশলা ছেড়ে স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে ঝুঁকছেন। স্বাস্থ্যকর খাবার মানেই স্বাদে ঘাটতি বলে মনে করেন অনেকে। সেদ্ধ করা খাবার খেতে খেতে মুখে অরুচি ধরে গেলে প্রয়োগ করতে পারেন কিছু কৌশল।
বাঙালির রসনাতৃপ্তি সহজ নয়। সর্ষে দিয়ে ইলিশ কিংবা নারকেল দিয়ে চিংড়ি কব্জি ডুবিয়ে না খেলে যেন মৎস্যকুলের জন্মই ব্যর্থ। ছুটির দিনে আবার সেই তালিকায় যুক্ত হয় লুচি কিংবা কচি পাঠা।
কিন্তু স্বাদের খেয়াল রাখতে রাখতে স্বাস্থ্যের সঙ্গে সমঝোতা করলেও বিপদ। ওত পেতে রয়েছে ডায়াবিটিস, উচ্চরক্তচাপ কিংবা কোলেস্টেরলের সমস্যা। তাই অনেকেই এখন তেলমশলা ছেড়ে স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে ঝুঁকছেন।
রন্ধনশিল্পীরা কিন্তু বলছেন, কয়েকটি টোটকা জানা থাকলে সাধারণ খাবারও হয়ে উঠতে পারে অসাধারণ। সেদ্ধ করা খাবার খেতে খেতে যদি মুখে অরুচি ধরে যায়, তবে প্রয়োগ করতে পারেন সহজ কিছু কৌশল।
১। মশলা ছড়িয়ে নেওয়া
তেলমশলা কমানো মানেই খাবারের স্বাদ কমে যাবে, এমন নয়। রান্নার উপর দিয়ে মশলা ছড়িয়ে দিলেই খাবার আর বিরক্তিকর লাগবে না। সাধারণ খাবারের মধ্যেই দিয়ে দিন রসুনকুচি। স্বাদ ও স্বাস্থ্যগুণ দুই-ই বাড়বে। বিভিন্ন তাজা ভেষজ কিংবা গোলমরিচও গুঁড়োও ছড়িয়ে দিতে পারেন উপরে। খাবারের স্বাদ বাড়বে।
২। কম ক্যালোরির সস
আজকাল মুদির দোকানে অনেক কম ক্যালোরির সস পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, সাধারণ বারবিকিউ সস ব্যবহার করার পরিবর্তে চিনি-মুক্ত বারবিকিউ সস বেছে নিতে পারেন। স্বাদ কমবে না, আবার ক্যালোরিতেও অনেক কম হবে। কাসুন্দি, সালসা, বাফেলো সস, স্রিরাচাও ব্যবহার করতে পারেন।
৩। সব্জি রোস্ট বা বেক করুন
তরকারি খেয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়লে, সব্জির ঝোল না করে ভাজা বা বেক করার চেষ্টা করুন। বাড়িতে যদি এয়ার ফ্রায়ার থাকে, তবে পছন্দের সব্জিতে অলিভ অয়েল এবং নুন মাখিয়ে এয়ার ফ্রাই করতে পারেন। সঙ্গে যদি পেঁয়াজ, রসুন মিশিয়ে নেন, তবে স্বাদ অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে।
৪। পরিমিত ফ্যাট
ফ্যাট ক্যালোরিতে বেশি। যাঁরা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাঁরা এই ধরনের খাবার থেকে দূরে থাকেন৷ কিন্তু স্বাস্থ্যকর ফ্যাট পরিমিত পরিমাণে খেলে খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। অলিভ অয়েল, পিনাট বাটার, অ্যাভোকাডো, চিয়া বীজ বা কাঠ বাদাম খেতে পারেন নিয়ম মেনে। বিশেষ করে জলখাবারের সঙ্গে এই ধরনের খাবার মিশিয়ে নিতে পারেন।
৫। লেবুর ছোঁয়া
খুব একটা স্বাদ নেই এমন খাবারেও যদি কিছুটা লেবুর রস মিশিয়ে দেওয়া যায়, তবে সহজ হতে পারে জিভের পক্ষে। ধরুন আপনি এমন খাবার খাচ্ছেন, যাতে সেদ্ধ মাছ রয়েছে, তবে সেই মাছে নির্দ্বিধায় কিছুতা লেবু চেপে নিন। একই কৌশল প্রয়োগ করতে পারেন স্যালাডের ক্ষেত্রেও। সকালের জলখাবারের সঙ্গে কমলালেবুর রস খাওয়া স্বাদ ও স্বাস্থ্য দুয়ের পক্ষেই ভাল। তবে এই কৌশলে আপাত স্বাদহীন খাবারও একটু টকটক হয়ে উঠবে। তাই টক ভাল না লাগলে এই কৌশল খুব একটা কাজে না-ও আসতে পারে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.