উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন রাজশাহীর ৯ উপজেলার বিএনপির প্রার্থীরা

উপজেলা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন রাজশাহীর ৯ উপজেলার বিএনপির প্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর উপজেলা নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন রাজশাহীর ৯ উপজেলায় বিএনপির প্রার্থীরা। দলের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের বড় একটি অংশ উপজেলা নির্বাচন বর্জনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

কাজেই নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়া নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নিয়ে পারেনি দলটি। তবে এ নির্বাচন নিয়ে আলাপ আলোচনার কমতি নেই বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে।

পিছিয়ে নেই রাজশাহীর নেতাকর্মীরাও। বিএনপি নেতাদের অনেকেই বলছেন, ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনই প্রমাণ করে দলীয় সরকার ও বর্তমান সিইসির অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে না। বরং নির্বাচনে অংশ না নিলে নেতাকর্মীরাও হামলা-মামলার মুখে পড়বে না। তবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষও যুক্তি দিয়েছেন বিএনপির অনেক নেতা। তারা বলছেন, গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়া উচিত। তা হলে নির্বাচনের প্রকৃত চিত্র দেশবাসী ও বহির্বিশ্ব জানবে।

নির্বাচনে গেলে সংসদ নির্বাচনে ‘ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির যে অভিযোগ, তা আরও মজবুত হবে বলেও মনে করেন তারা। রাজশাহী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন বলেন, ‘‘উপজেলা নির্বাচন নিয়ে তফসিলের পর দলের নীতিনির্ধারকরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এ নিয়ে তৃণমূলের মতামত সংগ্রহ করছেন হাই কমান্ড।

রাজশাহী বিএনপির একটি সূত্র জানায়, দলটির অনেক নেতা উপজেলা নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিএনপি যদি নির্বাচন বর্জন করে তবে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করতে চান। যাদের মধ্যে অনেকেই জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি। তবে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে প্রতিটি উপজেলা থেকে ৫ থেকে ৬ জন মনোনয়ন চাইতে পারে বলে দলটির স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন। রাজশাহী জেলায় নয়টি উপজেলা।

গত নির্বাচনে পাঁচটিতে বিএনপি, দুইটিতে আওয়ামী লীগ ও দুইটিতে জামায়াত নেতা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সে বার দলীয়ভাবে নির্বাচন না হলেও দলের সমর্থন নিতে হয়েছে প্রার্থীদের। এবার দলীয় মনোনয়ন ও দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে হবে তাদের। বিএনপির একাধিক সূত্রমতে, বাঘা উপজেলায় এবার বিএনপির প্রার্থী হতে চান দলটির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহবায়ক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এবং সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক যুবদলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন।

চারঘাট উপজেলার চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চাঁদের বিকল্প কারো এখন পর্যন্ত শোনা যায়নি। তবে পুঠিয়ায় বর্তমান চেয়ারম্যান আনোয়ার আলী জুম্মা ছাড়াও এবার উপজেলা ভোটে অংশ নিতে চান দলটির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন। দুর্গাপুরে এবারো নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপি নেতা গোলাম সাকলাইন।

গত নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। তিনি ছাড়াও এবার উপজেলায় অংশ নিতে চান বিএনপি নেতা মোল্লা হাসান ফারুক সুমন। দল নির্বাচনে অংশ নিলে মনোনয়ন চাইবেন বিএনপি নেতা রেজাউল কবির রেজাও বলে শোনা যাচ্ছে। বাগমারা উপজেলায় এবারো প্রার্থী হবেন দলের সভাপতি ডিএম জিয়াউর রহমান জিয়া। দল নির্বাচনে অংশ নিলে এবার মনোনয়ন চাইবেন বলে শোনা যাচ্ছে সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহানের নাম।

মোহনপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলার সহ-সভাপতি অধ্যাপক আব্দুস সামাদ এবারো নির্বাচন করতে আগ্রহী। তবে উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামিউল ইসলাম মুন এবার নির্বাচন করতে চান। পবায় এবার প্রার্থী হতে পারে বিএনপির নতুন মুখ। ইতোমধ্যেই আলোচনায় এসেছেন জেলা বিএনপির দুই সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম। এরা হলেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম। তবে বিএনপি নির্বাচনে আসলে মনোনয়ন চাইতে পারেন শাহজাহান আলীও।

তানোরে এবার উপজেলায় ভোটে লড়তে চান সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন। এছাড়াও এ উপজেলায় এবার নির্বাচন করতে আগ্রহী মুন্ডুমালা পৌরসভা বিএনপির একাংশের সভাপতি মোজাম্মেল হক। গোদাগাড়ী উপজেলায় বিএনপির চেয়ারম্যান ইছাহাক আলী আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। ফলে এবার এ উপজেলায় বিএনপির প্রার্থী হবেন হয়রত আলী।

মতিহার বার্তা ডট কম  – ১১ জানুয়ারি, ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply