যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোথাও স্কুলে গণহত্যা দেখা যায় না

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোথাও স্কুলে গণহত্যা দেখা যায় না

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোথাও স্কুলে গণহত্যা দেখা যায় না
যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোথাও স্কুলে গণহত্যা দেখা যায় না

নোমান ইবনে সাবিত/বিপি, নিউ ইয়র্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোথাও স্কুলে গণহত্যার ঘটনা দেখা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের সিনেটর ক্রিস মারফি। এরকম ঘটনা আমরাই বেছে নিয়েছি। এটি চলতে দেওয়াও আমাদের বেছে নেওয়া। মঙ্গলবার সিনেটে আইনপ্রণেতাদের পদক্ষেপ নিতে আবেগী আহ্বান জানান সিনেটর ক্রিস মারফি। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।

মঙ্গলবার এই বিতর্কে সপ্তাহের শেষ দিকে আরও তীব্র হতে যাচ্ছে। এই সময় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বন্দুকপন্থী লবি ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন টেক্সাসের হিউসটনে বার্ষিক সম্মেলন আয়োজন করছে।

এই আয়োজনে অনেক প্রখ্যাত রিপাবলিকান রাজনীতিবিদের বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট, টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজ। দ্রুত এর সমালোচনা করে টেড ক্রুজ বলেন, ‘মানুষ মার্কিন সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনীর অধীনে বন্দুক রাখার অধিকারকে আক্রমণ করতে বন্দুক হামলাকে ব্যবহার করবে। তিনি বলেন, ‘যখন এই ধরনের অপরাধ হয়, তখন প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তা রাজনীতিতে পরিণত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে আরও একবার নির্বিচার গুলিবর্ষণে ১৯ শিশু শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় মার্কিন রাজনীতিবিদদের ওপর চাপ বাড়ছে, সবার হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে। তবে এতে খুব সামান্য কিংবা একেবারেই কোনও পরিবর্তন না আসারও আশঙ্কা সামনে এসেছে। কারণ দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরেই এই বিতর্ক চলছে এবং প্রতিটি বন্দুক হামলার পর সংবাদমাধ্যম, রাজনীতিক ও অ্যাডভোকেসি গোষ্ঠীগুলো অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সোচ্চার হয়। প্রতিবারই কিছুদিন পর ইস্যুটি চাপা পড়ে যায়। এবারও ব্যতিক্রম খুব একটা আশা করা হচ্ছে না।

এভরিটাউন বন্দুক নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ জানিয়েছে, এই বছর এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে আটটি বন্দুক হামলা হয়েছে। নিউ ইয়র্কের সুপার মার্কেটে ১০ আফ্রিকান আমেরিকানকে হত্যার দশ দিনের মাথায় নতুন করে স্কুলে হামলার ঘটনা ঘটলো।

দশ বছর আগে কানেক্টিকাটের নিউটাউনে স্যান্ডি হুক প্রাথমিক স্কুলে এক হামলায় ২০ শিশু এবং আরও ছয় জন নিহত হন। এছাড়া চার বছর আগে ফ্লোরিডার এক মাধ্যমিক স্কুলে ১৭ জন নিহত হন। তবে এসব বড় বড় হামলার পরও বন্দুক কেনার প্রক্রিয়া ও এর মালিকানায় তাৎপর্যপূর্ণ কোনও পরিবর্তন আসেনি।

বিরক্ত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জাতীয় শোকের নেতৃত্ব দেওয়ার সময় বলেন, ‘আশা করেছিলাম, যখন রাষ্ট্রপতি হবো, তখন আমাকে আর এই কাজ করতে হবে না।’ মার্কিন বন্দুক লবিকে পরাস্ত করার এবং বন্দুকের মালিকানা আইন কঠোর করার একটি উপায় খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

বাইডেন বলেন, ‘আরেকটি গণহত্যা… এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সুন্দর, নিষ্পাপ, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। আমি অসুস্থ ও খুব ক্লান্ত। আমাদের কাজ করতে হবে। আর আমাকে বলবেন না যে, আমরা এই হত্যাকাণ্ডের ওপর প্রভাব ফেলতে পারি না।’

বাইডেন এমন এক সময়ে এসব কথা বলছেন যখন যুক্তরাষ্ট্রে সব ধরনের বন্দুক, বিশেষ করে উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন অ্যাসল্ট রাইফেল এবং সেমি অটোমেটিক পিস্তল যেকোনও সময়ের তুলনায় সস্তা ও সহজলভ্য হয়ে উঠেছে।

পাশাপাশি, মঙ্গলবারের হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার আবারও বন্দুক, জননিরাপত্তা এবং অধিকার নিয়ে অতি-পরিচিত যুক্তি ও বিতর্ক সামনে আসতে শুরু করেছে।

মতিহার বার্তা/এমআরটি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply