সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর পত্নীতলায় একটি বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়ে স্কুলে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। এতে লিখা আছে মাদক ব্যবসায়ী আবুল কাশেম কে বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে মানিনা মানবনা। নিচে লিখা আছে প্রচারে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকবৃন্দ ও এলাকাবাসী। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃস্টি হয়েছে। এক পক্ষ বলছে সভাপতির মান ক্ষুণ্ন করতে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অপরপক্ষ বলছে মাদক ব্যবসায়ী কে সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করতে হবে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার উত্তর রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কাশেমকে কেন্দ্র করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, উত্তর রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম দীর্ঘদিন যাবৎ মাদকের সাথে জড়িত। সে নিজেও একজন মাদক ব্যবসায়ী। ২০১১ সালে মাদকসহ সাপাহারে গ্রেপ্তার হন তিনি। গ্রেপ্তারের পর অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাদকদ্রব্য আইনে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে সাজা প্রদান করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে ঘোলা দিঘী হতে ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে বগুড়া যাওয়ার পথে জেলা পুলিশ হাতে আটক হন আবুল কাশেম। পরে তার বিরুদ্ধে সেখানে একটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। বর্তমানে তার নামে ওই মামলাটি চলমান রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কে জাতীর মেরুদণ্ড বলা হতে থাকে কিন্তু এরপরেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত একটি প্রতিষ্ঠানে একজন মাদক ব্যবসায়ী কে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে। যাতে করে স্কুলটির শিক্ষার্থীদের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এঘটনায় ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকবৃন্দ ও এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ওই স্কুল সহ স্কুল এলাকায় পোস্টার টাঙিয়ে এই অভিনব প্রতিবাদ জানায়। আমরা এই মাদককে ব্যবসায়ী কে বিদ্যালয়ের সভাপতির পদ থেকে অপসারণ দাবী জানাচ্ছি। তবে, অন্য একটি পক্ষ বলেন সভাপতির মান ক্ষুণ্ন করতে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তাদের চিহ্নিত করে অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
জানাযায়, চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল আকস্মিকভাবে ৮ জন অভিভাবক সদস্যদের ভোটে আবুল কাশেম সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই ওই এলাকায় নানা গুণঞ্জন সহ চাঞ্চল্য সৃস্টি হয়।
উত্তর রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) কুমুদ চন্দ্র বর্মন বলেন, কে বা কারা রাতের অন্ধকারে এই ধরনের পোস্টার লাগিয়েছিল। পরবর্তীতে সভাপতি সাহেবের নির্দেশ মোতাবেক ছাত্র-ছাত্রী দ্বারা পোস্টারগুলো অপসারণ করা হয়েছে। এবিষয়ে সাংবাদিকদের সংবাদ প্রকাশ না করার জন্যেও অনুরোধ জানান প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) কুমুদ চন্দ্র বর্মন।
এ বিষয়ে উত্তর রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কাশেমের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি পোস্টার টাঙানো ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যারা পোস্টার লাগছিল তাদের কে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, কিস্তু এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার বিরুদ্ধে মাদক মামলা এবং মাদক মামলায় সাজার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। সাংবাদিকদের সাথে সাক্ষাৎ করবেন বলেও মোবাইল ফোনে জানান তিনি।
এবিষয়ে বুধবার বিকেলে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. লিটন সরকারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মতিহার বার্তা/এমআরটি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.