মোঃ শিমুল ইসলাম চারঘাট প্রতিনিধি : রাজশাহীর চারঘাটে ল্যাকটেটিং ও মাতৃত্বকালীন ভাতা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। হতদরিদ্র মহিলাদের পরিবর্তে মাতৃত্বকালীন ভাতার সুবিধা নিচ্ছেন বড়লোকের স্ত্রীরা।
লাজলজ্জা আর শরম ত্যাগ করে ব্যাংক থেকে ছয় মাস পরপর এই ভাতা উঠয়ে নিচ্ছেন তারা। ব্যাংকের কর্মকর্তারা এসব নারীদের সাজগোজ দেখে অনেক সময় অবাক হন।
আর মাতৃত্বকালীন ভাতা যাদের পাওয়ার কথা তারাই থাকছেন উপেক্ষিত। জানা যায়, চারঘাট উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে মাতৃত্বকালীন ভাতা বড়লোকের স্ত্রীদের আঁচলে বাধা পড়ছে।
অফিসের লোকজন টাকার বিনিময়ে দরিদ্র মহিলাদের বাইরে রেখে অর্থ বিত্তশালী পরিবারের স্ত্রীদের সুযোগ করে দিচ্ছেন।যে কারণে চরমভাবে বঞ্চিত উপজেলার হতদরিদ্র নারীরা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা মানা হচ্ছে না। নামকাওয়াস্তে আইন মেনে অবস্থাশালীদের স্ত্রীদের দেওয়া হচ্ছে।চারঘাট পৌরসভার মধ্যে ছাদ দেওয়া ফ্ল্যাট বাড়ি,গাড়ি থাকা সত্ত্বেও পাচ্ছেন ল্যাকটেটিং ভাতা।
যা এলাকায় চরম বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। চারঘাট মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, সরকার দেশের হতদরিদ্র গর্ভবতী মায়ের চিকিৎসা ও প্রসব পরবর্তী কোলের শিশু সন্তান যাতে মায়ের বুকের দুধ পান সে জন্য এ ভাতা দিয়ে থাকে।
কিন্তু উপজেলায় ৪২৫ জনের যে মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়া হয় তাদের মধ্যে অনেককেই আইন লঙ্ঘন করে এ ভাতা নিচ্ছেন। এ ভাতার টাকা পেতে হলে ভাতা প্রত্যাশীদের নিজ নিজ ইউনিয়ন ও পৌরসভার মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
আবেদনপত্র পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ প্রাথমিক বাছাই প্রক্রিয়া শেষ করে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসে পাঠায়। সেখান থেকে বাছাই হয়ে পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে চুড়ান্ত বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু চারঘাট উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসের এক শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অন্ধকারে রেখে দরিদ্র নারীদের বাদ দিয়ে বড়লোকের স্ত্রীদের তালিকাভুক্ত করে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
যে কারণে সরকারের লক্ষ্য পূরণ করতে ব্যার্থ হচ্ছে এই প্রকল্পটি। এ জন্য বঞ্চিত হতদরিদ্র নারীরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আহব্বান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) রাশেদা পারভীন বলেন,আমি কিছু দিন পূর্বে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে চারঘাট মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দায়িত্ব নিয়েছি।
আগের তালিকা সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই।তবে এখানে দায়িত্ব নিয়েই বুঝেছি,এখানে রাজনৈতিক ভাবে অনেক সুপারিশ আসে। এ ব্যাপারে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধিদের কাছে থেকে তালিকা নিয়ে কমিটির মাধ্যমে চূড়ান্ত করি।
তবে এ বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মতিহার বার্তা ডট কম – ০৫ আগস্ট ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.