‘জিনের আছরে’ সন্তানকে পুকুরে ফেলে দেন মা!

‘জিনের আছরে’ সন্তানকে পুকুরে ফেলে দেন মা!

‘জিনের আছরে’ সন্তানকে পুকুরে ফেলে দেন মা!
‘জিনের আছরে’ সন্তানকে পুকুরে ফেলে দেন মা!

অনলাইন ডেস্ক: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বাবা-মায়ের মাঝখান থেকে ১৭ দিন বয়সী শিশু নিখোঁজ এবং পরে ওই শিশুর লাশ উদ্ধারের ঘটনা নতুন দিকে মোড় নিয়েছে। পুলিশ বলছে, শিশুটির মা শান্তা আক্তার ওরফে পিংকি নিজেই তার শিশু সন্তানকে পুকুরে ফেলে হত্যা করেছেন। ‘জিনের আছরে’র কারণে শিশুটিকে পুকুরে ফেলে দেন বলে শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে বাগেরহাট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা মোরেলগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত ঠাকুর দাশ শনিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি জানান, মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে নবজাতকের বাবা সুজন খানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানার বনগঞ্জ গ্রামের শান্তা আক্তার ওরফে পিংকির। একপর্যায়ে পিংকি মোরেলগঞ্জ চলে আসেন। আগের স্বামী-সন্তানের কথা গোপন করে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে সুজনের সঙ্গে ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর তার বিয়ে হয়। এই ঘরে সোহানা আক্তারের জন্ম হয়।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে পিংকি বলেন, ঘটনার দিন (১৫ নভেম্বর) রাতে কোনও এক সময় তার ওপর ‘জিনের আছর’ হলে তিনি শিশুটিকে নিয়ে ঘরের বাইরে চলে যান। এরপর বাড়ির পাশের নদী-খাল ও পুকুর পাড়ে শিশুটিকে কোলে নিয়ে ঘুরতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি পুকুর পাড়ে এসে কিছু সময় বসে থাকেন। পরে সোহানাকে পুকুরের ভেতর ছুড়ে ফেলে দিয়ে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়েন। এর কিছু সময় পর যখন তার ঘুম ভেঙে যায়, তখন তিনি আগের সব কিছু ভুলে গিয়ে শিশুটিকে না পেয়ে চিৎকার শুরু করেন।

ওসি আরও বলেন, শান্তা আক্তার ওরফে পিংকিকে আটকের পর শুক্রবার তার বাবা-মা ও আগের স্বামী এবং দুই বছরের মেয়ে নুসরাত থানা আসে। তারাই তাকে শনাক্ত করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ নভেম্বর মধ্যরাতের কোনও এক সময় মোরেলগঞ্জ উপজেলার গাবতলা গ্রামে সুজন খান ও শান্তা আক্তার দম্পতির সন্তান সোহানা আক্তার নিখোঁজ হয়। বলা হচ্ছিলো, ঘুমন্ত মা-বাবার কোল থেকে শিশুটিকে চুরি করা হয়। ঘটনার পর থেকে শিশুটিকে উদ্ধারে পুলিশ অভিযান চালাতে থাকে। পরের দিন রাতে শিশুটির দাদা আলী হোসেন খান বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মোরেলগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। ঘটনার তিন দিন পর তাদের বাড়ির পাশে একটি পুকুর থেকে সোহানার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে প্রথম থেকে সন্দেহ করে আসছিল পুলিশ। ১৮ নভেম্বর বিকালে নবজাতক সোহানার দাফনের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ শিশুটির বাবা, চাচা ও ফুফাকে থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১৯ নভেম্বর সকালে নিহত শিশুটির বাবা সুজন খানকে (৩০) সকালে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে সুজন খানের তিন দিনের রিমান্ডও মঞ্জুর করেন আদালত।

পরে শিশুর মা শান্তা আক্তার ওরফে পিংকির জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম-ঠিকানায় ভুলের সূত্র ধরে শুক্রবার সকালে তাকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসে পুলিশ। পরে বিকালে শিশুটির মা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাকে কারাগারে রাখা হয়েছে।বাংলা ট্রিবিউন।

মতিহার বার্তা ডট কম: ২৮ নভেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply