পুঠিয়ায় স্বপ্নের ঘর প্রস্তুত ‘নতুন ঠিকানায় যাওয়ার অপেক্ষায় গৃহহীনরা’

পুঠিয়ায় স্বপ্নের ঘর প্রস্তুত ‘নতুন ঠিকানায় যাওয়ার অপেক্ষায় গৃহহীনরা’

পুঠিয়ায় স্বপ্নের ঘর প্রস্তুত ‘নতুন ঠিকানায় যাওয়ার অপেক্ষায় গৃহহীনরা’
পুঠিয়ায় স্বপ্নের ঘর প্রস্তুত ‘নতুন ঠিকানায় যাওয়ার অপেক্ষায় গৃহহীনরা’

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় গৃহহীন পরিবারের জন্য সরকারি খাস জমিতে গৃহ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে তাদের নতুন ঠিকানা। পরিবারগুলোর মুখে হাসি ফুটেছে। তালিকাভুক্ত ৫৪ টি পরিবার তাদের স্বপ্নের ঘর পাওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন।

রোববার (১০ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ পিএএ সরেজমিনে গিয়ে ঘর নির্মান কাজের সার্বিক বিষয় পরিদর্শন করেন। আশ্রয়ণের অধিকার-শেখ হাসিনার উপহার’এই স্লোগানে পুঠিয়া উপজেলায় ভূমি ও গৃহহীন মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আবাসন উপহার হিসেবে দেয়া প্রদত্ত খাস জমিতে ৫৪টি পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণের কাজ করছে পুঠিয়া উপজেলা প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে গৃহ নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছেন উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা প্রশাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য চলতি অর্থ-বছরে পুঠিয়া উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নে ৫৪ টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে পুঠিয়া ইউনিয়নে ২৪ টি, জিউপাড়া ইউনিয়নে ৯ টি, বেলপুকুর ইউনিয়নে ৯ ও শিলমাড়িয়া ইউনিয়নে ১২ টি ঘর নির্মান করা হচ্ছে প্রত্যেক সুবিধাভোগীর নামে সরকারি ২ শতাংশ জমির বন্দোবস্ত দলিল ১৫ জানুয়ারীর মধ্যে সকল কাজ সম্পন্ন করে সুবিধাভোগী পরিবারের কাছে ঘরের চাবি হস্তান্তর করবেন বলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীন প্রত্যেক পরিবারকে ২ শতাংশ খাসজমি বন্দোবস্ত করে ওই জমির ওপর ঘর তৈরি করে দেয়া হচ্ছে। দুই কক্ষবিশিষ্ট এসব আধা পাকা ঘরের প্রতিটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। সবগুলো ঘর সরকার নির্ধারিত একই নকশায় হচ্ছে। রান্নাঘর, সংযুক্ত টয়লেটসহ অন্যান্য সুবিধা। সেই সাথে ওই পরিবারগুলোর আধুৃনিক সুবিধার জন্য থাকছে আলাদা বিদ্যুৎ সংযোগ, পানি সরবরাহের পাশাপাশি ওই এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে আলোকবাতি। আর তাদের যাতায়াতের জন্য তৈরি করা হচ্ছে নতুন সড়ক।

পুঠিয়া ইউনিয়নের জাহানারা বেগম বলেন, আমি মানুষের সাহায্য নিয়ে অন্যের বাড়িতে বসবাস করতাম। শেখ হাসিনা আমাকে এই ঘরটা দিয়েছে। উপজেলার স্যাররা আমার জন্য এ ঘরটা বানাইছে। আমি অনেক খুশি।

পুঠিয়া ইউনিয়নের স্বামীহীন সুফিয়া বেগম বলেন, আমার স্বামী মারা গেছে ১০/১২ বছর হলো। তারপর থেকে আমি অসহায় জীবন যাপন করছি। আমার কোন জায়গা সম্পত্তিও নেই। থাকার ঘরও নেই। বাবার বাড়িতে কোন রকমে আছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার জন্য এই ঘরটি তৈরি করতেছে- তাই প্রতিদিনই ঘরটা দেখতে আসি আর শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি।

কয়েকজন গৃহহীন বলেন, মোদের নিজের জমি ও ঘরবাড়ি নাই। মানুষের জমিতে কোনো রকম আশ্রয় নিয়ে পাখির মতো বাসা বেধে বসবাস করেছিলাম। জীবনে কখনো ভাবিনি পাকা ঘরে থাকবো। আমরা জীবনে যা কল্পনাও করিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আমাদের জন্য তা করেছে। এজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাই এবং তার জন্য দোয়া করি।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্চু বলেন, ঘর নিমার্ণের কাজ সঠিকভাবে তদারকি করা হচ্ছে। সারাদেশের ন্যায় আমার উপজেলায় কেউ গৃহহীন থাকবে না। আওয়ামী লীগ সরকার যে উন্নয়নে বিশ্বাসী এটি তার আরেকটি বড় উদাহরণ। মুজিব শতবর্ষে গৃহহীনদের ঘর নির্মানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার করা অঙ্গিকার আজ তা বাস্তবায়ন হচ্ছে। আ.লীগ সরকার যে উন্নয়নে বিশ্বাসী এটি তার আরেকটি বড় উদাহরণ। মুজিব শতবর্ষে গৃহহীনদের ঘর নির্মানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার করা অঙ্গিকার আজ তা বাস্তবায়ন হচ্ছের্।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ পিএএ জানান, আমাদের বরাদ্দকৃত ঘরের নির্মাণকাজ প্রায়ই শেষের দিকে। মানসম্মত ঘর দরিদ্র ও ভূমিহীনদের মাঝে তুলে দেয়াই এখন তাদের মূল লক্ষ্য। মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকার কর্তৃক প্রদেয় এই প্রকল্প অত্যন্ত সুন্দরভাবে সম্পন্ন হওয়ার পথে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন করে এঘরগুলো ঘরহীন অসহায় পরিবার গুলোর মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হবে। এই ঘর বরাদ্দে কোনো প্রকার তদবির ও অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা যেন কেউ নিতে না পারে সেজন্য সঠিক তদারকিও করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরও জানান, আগামী ২০ জানুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্মিত ঘরগুলো উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধন শেষে ওই অসহায় পরিবারের মাঝে তাদের স্বপ্নের নতুন ঠিকানা পাঁকা ঘরগুলো হস্তাস্তর করা হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার ফরিদুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি, যেন অসহায় পরিবারগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে পারেন।

এদিকে, মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছেন জেনে খুশি উপকারভোগীরা। খাস জমিসহ পাঁকা ঘর দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তারা। বর্তমানে স্বপ্নের ঘরে উঠতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন উপকারভোগীরা।

মতিহার বার্তা ডট কম: ১০ জানুয়ারী ২০২১

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply