আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আগামী কয়েক দশকে বিশ্বে দাবদাহ তিনগুণ বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই শঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গ্রীষ্মকাল দীর্ঘস্থায়ী হয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে বিভিন্ন অঞ্চল। গ্রীষ্মপ্রধান দেশে গরমকালের গড় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির ওপরে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যার কারণে বিশ্বে কয়েকশ কোটি মানুষ নিয়মিতভাবে অত্যন্ত বিপজ্জনক তাপমাত্রার সংস্পর্শে থাকবেন বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর আনাদুলু এজেন্সি।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বিগত কয়েক বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গড় তাপমাত্রা বেড়েছে। আর চলতি বছর ভয়াবহ দাবদাহে বিপর্যস্ত হতে দেখা যাচ্ছে অনেক দেশকে। বাদ যায়নি শীতপ্রধান অঞ্চলও। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট জার্নালে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি এবং ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এই গবেষণাটি করেছেন। এতে বলা হয়, আগামী কয়েক দশকে বিশ্বে দাবদাহ তিনগুণ বাড়তে পারে। পৃথিবীর মধ্য-অক্ষাংশে এর প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে গ্রীষ্মকালের কোনো কোনো সময় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে দেখা যায়।
গবেষকেরা বলছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে এই অসহনীয় তাপপ্রবাহের কারণে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপানসহ পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোর গ্রীষ্মকাল দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। আর ২১০০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক দাবদাহ বাড়তে পারে তিনগুণ। গ্রীষ্মপ্রধান দেশে যার প্রভাব হবে ভয়াবহ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাপমাত্রা ১২৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেলে সেটিকে “অত্যন্ত বিপজ্জনক” বলে মনে করা হয়। বর্তমানে তাপমাত্রা সে পর্যায়ে খুব একটা পৌঁছাতে দেখা যায় না। তবে চলতি শতাব্দীর শেষ দিকে ভারতের মতো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলগুলোতে এ ধরনের তাপপ্রবাহ প্রতিবছর এক থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা ১ শতাংশের কম বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
চলতি বছর মিশরে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে। গত বছর স্কটল্যান্ডের জলবায়ু সম্মেলনে দেশগুলো জানায়, চলতি বছরের সম্মেলনে কার্বন নির্গমন হ্রাসের বিষয়ে তারা পরিকল্পনা দেবে। তবে অনেক দেশই সময়মতো পরিকল্পনা জমা দেয়নি।
মতিহার বার্তা /এএম
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.