আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইথিওপিয়ার তাইগ্রে অঞ্চলে শিশুদের একটি খেলার ময়দানে বিমান হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অন্তত তিনটি শিশু রয়েছে। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসা কর্মকর্তারা। তবে বেসামরিক লোকদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইথিওপিয়ান সরকার।
শুক্রবার তাইগ্রের রাজধানী মেকেলে এ বিমান হামলা চালানো হয়। তাইগ্রে এবং আমহারা সীমান্তে ইথিওপিয়ান সরকার ও তাইগ্রেয়ান বাহিনীর মধ্যে প্রায় চার মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার দু’দিন পরেই এ হামলার ঘটনা ঘটলো।
আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত তাইগ্রাই টেলিভিশন এ হামলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছে। ইথিওপিয়ার আকাশসীমায় আর কেউ সামরিক আকাশযান পরিচালনা করে না।
ইথিওপিয়ান সরকার অনেকবারই তাইগ্রের বাসিন্দাদের সামরিক স্থাপনাগুলো থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বলেছে, তাদের লক্ষ্য সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
আইডার হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কিব্রোম গেব্রেসেলাসি টুইটারে বলেছেন, হাসপাতালটিতে দুই শিশুসহ নিহত চারজন এবং আহত নয়জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, শিশুদের একটি খেলার ময়দানে হামলা হয়েছে।
ফাসিকা আমডেসলাসি নামে আইডার হাসপাতালের এক সার্জন জানিয়েছেন, মেকেলে হাসপাতালের এক সহকর্মী তাকে বলেছেন, সেখানে এক মা ও এক শিশুসহ আরও তিনটি মরদেহ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে সাতে দাঁড়িয়েছে।
তবে কেন্দ্রীয় সরকারের মুখপাত্র লেগেসে টুলু বলেছেন, বেসামরিক লোক হতাহতের খবরটি ‘মিথ্যা এবং বানোয়াট নাটক’। তিনি তাইগ্রেয়ান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ‘মরদেহের ব্যাগ’ ফেলার অভিযোগ তুলেছেন।
তবে তাইগ্রাই টিভিতে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে হামলায় একটি ভবনের ছাদ উড়ে যেতে দেখা গেছে। এর ফলে ভেতরে শিশুদের খেলার জন্য কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত স্লাইড উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। এছাড়া জরুরি উদ্ধার কর্মীদের স্ট্রেচার নিয়ে তৎপরতাও ধরা পড়েছে ভিডিওতে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তাইগ্রেতে সরকারি বিমান হামলায় এর আগেও বহু বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। গত জানুয়ারিতে ডেডেবিটে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ড্রোন হামলায় ৫৬ জন নিহত এবং শিশুসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।
ইথিওপিয়ার এই অঞ্চলটি তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের (টিপিএলএফ) নিয়ন্ত্রণে ছিল। ১৯৯১ সালে টিপিএলএফের নেতৃত্বে ইথিওপিয়া থেকে সামরিক সরকার উৎখাত করা হয়। এরপর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী আবি আহমেদ ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগপর্যন্ত দেশটির রাজনীতিতে নিয়ন্ত্রণ ছিল এই গোষ্ঠীর হাতে।
২০২১ সালের জুনে তাইগ্রে অঞ্চলের বড় একটি অংশ ফের দখলে নেয় টিপিএলএফ। সেখান থেকে ইথিওপিয়ার সেনাদের প্রত্যাহারও করা হয়। পরে ওই অঞ্চলে আবারও অভিযান শুরু করে সরকারি বাহিনী।
মতিহার বার্তা /এএম
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.