অনলাইন ডেস্ক: মানুষকে আল্লাহ তাআলা সীমাহীন ভালোবাসেন। বান্দার প্রতি আল্লাহ পাকের দয়া-মায়া, করুণা অনন্ত অসীম। আল্লাহ তাআলঅ নিজেই ঘোষণা করেছেন, নিশ্চয় তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অতিশয় দয়াময়। নিজের ভুল বুঝে আল্লাহর দিকে ফিরে আসা বান্দাই আল্লাহর কাছে অনন্য মর্যাদার অধিকারী। তাওবা হচ্ছে আল্লাহর দিকে ফিরে আসা। তাওবার প্রয়োজনীতা ও গুরুত্ব জানার আগে এর পরিচয় জানা আবশ্যক। তাওবার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরা হলো-
তাওবা শব্দের অর্থ হলো- ফিরে আসা। যখন তাওবা শব্দটির সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে হয় তখন তার তাৎপর্য দাঁড়ায়, বান্দা তার কৃত অন্যায়ের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসা। সে অন্যায় সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা, ভবিষ্যতে এমন অন্যায় না করার দৃঢ়-সংকল্প করা। এমন দৃঢ়-সংকল্প করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার নামই হচ্ছে তাওবা।
তাওবার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব
যে ব্যক্তি নিজের অন্যায়ের জন্য তওবা করবে, সে অবশ্যই আল্লাহর নাফরমানীর কাজ থেকে সর্বদা বিরত থাকতে সচেষ্ট হবে। আল্লাহ তাআলার তরফ থেকে আরোপিত ফরজসমূহকে যত্নসহকারে আদায় করবে। বান্দার অধিকার খর্ব হলে যেমন- কাউকে গাল-মন্দ, গিবত-শেকায়াত, অত্যাচার-নির্যাতন করলে তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া। এ কারণেই ইমাম রাজি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, বান্দার উচিত সর্বদা আল্লাহর দরবারে তাওবা করা। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-
১. হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে এক ব্যক্তি এমন একজন ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিল, যে গুনাহ করে তাওবা করে; পুনরায় গুনাহ করে। আবার তাওবা করে আবার গুনাহ করে। আবার গুনাহের কাজে মশগুল হয় এবং আবার তাওবা-ইসতেগফার করে। এ রূপ করতে থাকা ব্যক্তির কি অবস্থা হবে? হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, তার কর্তব্য হলো সর্বদা তাওবা-ইসতেগফার করতে থাকা। কেননা তাওবা-ইসতেগফার অব্যাহত থাকলে শয়তান ব্যর্থ হয়ে যাবে। শয়তান বলবে, এ ব্যক্তিকে গুনাহর কাজে সর্বদা মশগুল রাখতে আমি অক্ষম।’
২. হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে তাওবা করতে থাক। কেননা আমি নিজে দৈনিক ১০০ বার তাওবা করি।’
৩. হজরত আবু আইউব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আমি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে একথা শুনেছি, যা তোমাদের কাছ থেকে গোপন রেখেছিলাম তা এই, তিনি বলেছেন, যদি তোমরা গুনাহ করে আল্লাহ তাআলার মহান দরবারে তাওবা-ইসতেগফার না করতে, তবে আল্লাহ তাআলা এমন এক মাখলুক সৃষ্টি করতেন, যারা গুনাহ করে আল্লাহ তাআলার দরবারে তাওবা করতো, তখন আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ক্ষমা করতেন। (মুসলিম)
সুতরাং বোঝা যায় যে, বান্দার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওবা-ইসতেগফারের সুযোগদান এক মহা নেয়ামতস্বরূপ। তাঁর এ নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা মুসলিমের জন্য একান্ত অপরিহার্য বিষয়।
মুসলিম উম্মাহর উচিত মহান আল্লাহর দরবারে প্রতিদিন তাওবা-ইসতেগফার তথা ক্ষমা প্রাথনা করা, নিজেদের করা গুনাহ থেকে আল্লাহর দিকে ফিরে আসা। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিসের উপর আমল করা।
আল্লাহ তাআলা সবাইকে তাঁর মহান দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন। গুনাহ ছেড়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.