মিজানুর রহমান: কখনও কখনও বড় বিপদের আগে থেকেই সঙ্কেত দেয় শরীর। কিন্তু হৃদ্রোগের উপসর্গগুলি বহু ক্ষেত্রেই অন্যান্য রোগের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলি। এমনই একটি লক্ষণ বুকে ব্যথা বা অ্যানজাইনা পেকটোরিস।
হৃদ্রোগ সব সময়ে যে হঠাৎ হবে, এমনটা নয়। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে নীরব ঘাতকের মতো হাজির হয় এই রোগ। কখনও কখনও বড় বিপদের আগে থেকেই সঙ্কেত দিতে থাকে শরীর। কিন্তু এই উপসর্গগুলি আমরা অনেক ক্ষেত্রেই অন্যান্য রোগের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলি।
কিছু ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকেও সে ভাবে কোনও ব্যথাও অনুভব করেন না রোগী। কিন্তু ভিতরে ভিতরে ঘটে যায় বিপদ। চিকিৎসকরা বলছেন, হৃদ্রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে দশ বছর আগেও। এমনই একটি লক্ষণ হল বুকে ব্যথা বা অ্যানজাইনা পেকটোরিস।
অ্যানজাইনা পেকটোরিস হল করোনারি ধমনীর অসুখ। বুকে চাপ ধরা, ভারী লাগা, বুকে আঁটসাঁট লাগা বা ব্যথা এই সমস্যার লক্ষণ। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন বলছে, অ্যানজাইনা পেকটোরিস মূলত ৪ ধরনের। স্টেবল অ্যানজাইনা, আনস্টেবল অ্যানজাইনা, মাইক্রোভাসকুলার অ্যানজাইনা এবং ভাসোস্পাস্টিক অ্যানজাইনা।
অনেক সময়ে মানুষ এই ব্যথাকে গ্যাসের সমস্যা বলে ভুল করেন। বুকের কোন ব্যথা গ্যাসের থেকে হচ্ছে আর কোনটি অ্যানজাইনা পেকটোরিস, তা বোঝা সম্ভব নয় সাধারণ মানুষের পক্ষে। তাই নিশ্চিত থাকতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বিচক্ষণতার পরিচয়।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণাপত্রে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার দশ বছর আগেই অ্যানজাইনা পেকটোরিস দেখা দিতে পারে। ২০০২ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে এই গবেষণায়।
বুকে ব্যথা বা হৃদ্যন্ত্রের রোগের কোনও পূর্ব ইতিহাস নেই ,এমন ৫ লক্ষেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির তথ্য খতিয়ে দেখেন গবেষকরা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রথম বার বুকে ব্যথা হওয়ার এক বছরের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ১৫ শতাংশ।
হাসপাতালে যাওয়ার পরেও পুরোপুরি দূর হয়নি ঝুঁকি। পরবর্তী দশ বছরেও থেকে গিয়েছে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। গবেষকদের মতে, যাঁদের অ্যানজাইনা পেকটোরিসের ইতিহাস রয়েছে কিংবা ডাক্তারি পরিভাষায় যাঁদের ঝুঁকি বেশি, তাঁদের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। যাতে ভবিষ্যতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমানো যায়।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.