শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান কর্তন রাজশাহীতে বালু মজুদ করতে ১০ একর জমির কাঁচা ধান সাবাড় বিশ্বের দীর্ঘতম গাড়িতে রয়েছে সুইমিং পুল, হেলিপ্যাডও ছুটির দিনে হেঁশেলে খুব বেশি সময় কাটাতে চান না? রবিবারে পেটপুজো হোক তেহারি দিয়েই দাম দিয়ে ছেঁড়া, রংচটা জিন্‌স কিনবেন কেন? উপায় জানা থাকলে নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারেন উন্মুক্ত বক্ষখাঁজ, খোলামেলা পিঠ, ভূমির মতো ব্লাউজ় পরেই ভিড়ের মাঝে নজরে আসতে পারেন আপনিও স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য বাড়িতেই স্ক্রাব তৈরি করে ফেলতে পারেন, কিন্তু কতটা চালের গুঁড়ো দেবেন? গরমে শরীর তো ঠান্ডা করবেই সঙ্গে ত্বকেরও যত্ন নেবে বেলের পানা, কী ভাবে বানাবেন? গাজ়া এবং ইরানে হামলা চালাতে ইজ়রায়েলকে ফের ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্রসাহায্য আমেরিকার! ইজ়রায়েলকে জবাব দিতে সর্বোচ্চ নেতার ফতোয়ার কথাও ভুলতে চায় ইরান, এ বার কি পরমাণু যুদ্ধ?
মহান মে দিবসে আওয়ামী লীগের ভূমিকা

মহান মে দিবসে আওয়ামী লীগের ভূমিকা

মতিহার বার্তা ডেস্ক : আজ মহান মে দিবস। সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হচ্ছে। আজকের এই দিন শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন। বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণার উৎস এই দিন। মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা আর শ্রমিকদের শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটার স্বপ্ন দেখারও দিন এটি।

সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস। বাংলাদেশে মে দিবসের পটভূমি বেশ পুরানো। বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলই শুধুমাত্র শ্রমিকদের দাবি আদায়ে জন্মলগ্ন থেকে কাজ করে আসছে। আর যে দলটি শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কাজ করে যাছে সেই দলটি হল আজকের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই দলটিরও প্রতিষ্ঠা হয়েছিল গরিব দুঃখী, মেহনতি মানুষ সঙ্গে নিয়ে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে আওয়ামী লীগের প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে দীর্ঘ জেল-জুলুম-অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে।
১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে গৃহীত নবগঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের খসড়া মেনিফেস্টোতে ‘শ্রম অধিকার’কে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে বলা হয়।
‘প্রত্যেক অধিবাসীরই কাজ করার অধিকার অর্থাৎ, সুযোগ ও যোগ্যতা অনুযায়ী নিযুক্ত হওয়ার এবং কাজের গুণ ও পরিমাণ-অনুযায়ী রাষ্ট্র নির্ধারিত উপযুক্ত বেতন পাওয়ার পূর্ণ অধিকার প্রতিষ্ঠিত করিতে হইবে। সরকারী কর্মচারী, শ্রমিক ও মজুরের সর্বাধিক দৈনিক কার্যকাল ও নিম্নতম মজুরী রাষ্ট্র আইনতভাবে নির্দ্দিষ্ট করিবে। সর্বাধিক কার্যকাল দিনে ৬ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৩৬ ঘণ্টার অধিক হওয়া উচিত নয়। বার্ষিক ও সাময়িক ছুটির ব্যবস্থা রাখিতে হইবে।’
১৯৫৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেলে শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠায় বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগের এ সরকারের সময় প্রথম লেবার রেজিস্ট্রেশন আইন প্রণীত হয়। ফলে সাংবিধানিকভাবে
উন্নয়ন, শিল্পের প্রসার এবং কৃষি ও সমবায়সহ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে দেশের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করে।
আওয়ামী লীগ শাসনামলেই ১৯৫৬ সালে প্রথম আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শ্রমিক সংগঠন এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মে দিবস পালিত হয়। ১৯৫৬ সালে মে দিবস সরকারি ছুটি ঘোষিত হয়। এরপর ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারির পর আইয়ুব খান মে দিবসকে ধর্মীয় লেবাস লাগাতে তৎপর হয়ে ওঠে। থমকে দাঁড়ায় শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রা।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর সামরিক শাসকগোষ্ঠী শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে আওয়ামী লীগ গৃহীত পদক্ষেপগুলো একে একে বাতিল করলে কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষের জীবনে নেমে আসে অত্যাচার-নির্যাতন। বঙ্গবন্ধুর সরকার যেখানে ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা, বকেয়া ঋণ ও কর মওকুফ করে দিয়েছিলেন সেখানে ১৫ আগস্ট-পরবর্তীতে খুনিচক্র ক্ষমতায় বসে সেই খাজনা এবং বকেয়া ঋণ ও কর চক্রবৃদ্ধি সুদসহ আদায় করে। নিত্যনতুন করারোপ করে গরিব কৃষক-শ্রমিককে শোষণ করা মোশতাক-জিয়া খুনি সরকারের একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। রেল ভাড়া, লবণ কর, কীটনাশক ঔষধের মূল্য, কৃষির সরঞ্জাম, পাওয়ার পাম্প ও তেলের দাম মাত্রাতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি করা হয়। বৈদেশিক ঋণের দাসত্বের নিগঢ়ে বেঁধে ফেলা হয় গোটা জাতিকে।
১৯৭৭ সালের চরম রাজনৈতিক বৈরিতা, জেল-জলুম, অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্যে ১ মে দেশব্যাপী মহান মে দিবস পালন করে আওয়ামী লীগ। এই মে দিবসে শ্রমিক-শ্রেণি তথা মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারের দমননীতির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ। শ্রমজীবী মানুষের লক্ষ কোটি কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ উচ্চারিত হয়।
১৯৮১ সালে ১৩, ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে গৃহীত গঠনতন্ত্রে কৃষক-শ্রমিকসহ সকল মেহনতি ও অনগ্রসর জনগণের ওপর শোষণ অবসানের জন্য পূর্ণ অর্থনৈতিক মুক্তি ও সামাজিক স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শোষণমুক্ত ও সুষম সাম্যভিত্তিক এক সমাজ প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এ সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। দীর্ঘ ছয় বছর নির্বাসিত জীবন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে আয়োজিত গণসংবর্ধনায় কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন।
‘বঙ্গবন্ধু ঘোষিত দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করে দিতে চাই।আমি চাই বাংলার মানুষের মুক্তি। শোষণের মুক্তি। বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছিলেন। আজ যদি বাংলার মানুষের মুক্তি না আসে, তবে আমার কাছে মৃত্যুই শ্রেয়। আমি আপনাদের পাশে থেকে সংগ্রাম করে মরতে চাই।’

মতিহার বার্তা ডট কম  ০২ মে ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply