রাজশাহীর সময় ডেস্ক : জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্তর্কোন্দল চরমে। ঐক্যফ্রন্টের অসঙ্গতি ও শরিকদের সঙ্গে টানাপোড়েনে বিএনপির স্বেচ্ছাচার-মূলক সিদ্ধান্তকে দায়ী করা হচ্ছে। জোটের সৃষ্ট অসঙ্গতি দূর করতে আগামী ১০ জুন শরিকদের বৈঠক হওয়ার কথা। সে বৈঠকে সৃষ্ট অসঙ্গতি দূর করতে বিএনপিকে শরিকদের কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। যে প্রশ্নগুলোর সদুত্তরের উপরেই নির্ভর করবে ঐক্যফ্রন্টে টিকে থাকা না থাকা। ফলে একে জোটের ভাগ্য নির্ধারণী পর্ব বলেও মনে করা হচ্ছে।
ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির প্রভাবশালী নেতাদের সম্মিলিত প্রশ্ন কী কী হতে পারে- নেতাদের সঙ্গে এ সম্পর্কিত আলাপচারিতায় প্রাপ্ত প্রশ্নগুলো তুলে ধরা হলো-
বিএনপিকে যেসব প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে-
প্রথমত, নির্বাচনের আগে ঢাকাতেই অন্তত ৭/৮টি সমাবেশ করার কথা ছিলো। কেন বিএনপি এ উদ্যোগ থেকে বিরত থেকেছে? দলটির শীর্ষ নেতা কোন অদৃশ্য শক্তির নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছেন?
দ্বিতীয়ত, বর্তমান স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আন্দোলন চান না, তাহলে কি খালেদা জিয়ার প্রতি কমিটমেন্ট নেই?
তৃতীয়ত, বিএনপি বলে আসছে, নেতাকর্মীরা মামলায় পর্যুদস্ত, সংগঠন গুছিয়ে আন্দোলনে যাবে। গুছিয়ে-গাছিয়ে কারা আন্দোলন করে? সব সময় বাধা ছিল, বিএনপি কি বাধাহীন আন্দোলন প্রত্যাশা করে?
চতুর্থত, সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান শপথ নেওয়ার পর বিএনপি মহাসচিব তাদের বেইমান, বিশ্বাসঘাতক বলেছিলেন। এরপর জানালেন তার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সংসদে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। কেন? এর ফলে আন্দোলনের স্পিরিট নষ্ট হয়েছে। এই সংসদকে কেন্দ্র করে বিএনপির আন্দোলনের কোনও চিন্তা নেই, এটাই কি প্রতীয়মান হয় না?
ষষ্ঠত, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তারেক রহমানের নেতৃত্ব, জামায়াতের সঙ্গে জোটগত সম্পর্ক থাকা নিয়ে প্রশ্ন আছে। প্রশ্ন আছে দেশের নাগরিক সমাজের মধ্যেও। প্রভাবশালী একটি গোষ্ঠীও এই দুটো বিষয় সহজে গ্রহণ করছে না, সেক্ষেত্রে সমাধান কী?
সপ্তমত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হলে ড. কামাল হোসেনকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু ওই প্রস্তাব গোপনে দেওয়া হয়েছিল। প্রশ্ন হলো, এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে গোপনে প্রস্তাব কেন?
অষ্টত, নির্বাচনের আগে বিএনপি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার করেনি। যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত পরিষ্কারভাবে কামাল হোসেনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিজয়ী হলে জোট থেকে কে হবেন প্রধানমন্ত্রী? এ নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও সিদ্ধান্ত দেয়নি? দিলো না কেন?
সর্বশেষ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করার পর ৫ মাস পার হয়ে গেলো। নির্বাচনী ফল প্রত্যাখ্যানের পর এতদিন পার করেও বিএনপি কোনও কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়নি কেন?
এমন প্রেক্ষাপটে ঐক্যের স্বস্তি ও শৃঙ্খলতা ফিরিয়ে আনতে বিএনপি এসব প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারবে কিনা তার ওপরে নির্ভর করছে এই জোটটির টিকে থাকা। উদ্ভূত প্রশ্নের প্রেক্ষাপটে জোট টিকিয়ে রাখতে বিএনপির প্রশ্নোত্তর পর্ব সহজ হবে না বলে মনে করছেন অনেকেই।
রাজশাহীর সময় ডট কম – ১০ জুন, ২০১৯
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.